হবিগঞ্জে কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, সৈনিক, যোদ্ধা, গায়ক ও অভিনেতা। কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। নজরুলের কবিতা, গান ও
সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৃৎ লেখক। তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নজরুল একাডেমি হবিগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত স্কুল পর্যায়ে কবিতা আবৃত্তি ও নজরুল বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপসচিব ও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিসি আরও বলেন- অনেকে আজ নজরুলের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী সম্পর্কে জানেন না। ডিজিটাল যুগে এসে অনেকেই নজরুলকে ভুলতে বসেছেন। তারা জানেন না নজরুল কি। তাই আমাদের এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। বাংলা ভাষাকে জানতে হলে নজরুলকে জানতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন। ১৯৭৬ সালে বাংলা ১২ ভাদ্র তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কবির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন তিনি।
গতকাল রবিবার হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রেজওয়ান আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নজরুল একাডেমি হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পৌর কমিশনার আব্দুল মোতালিব মমরাজ। নজরুল একাডেমি হবিগঞ্জের সভাপতি কবি তাহমিনা বেগম গিনির সভাপতিত্বে ও সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী আব্দুল আউয়াল তালুকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান, হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আলফাজ উদ্দিন, লেখক আব্দুল হক, সাহিত্য পরিষদ হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এম,এ ওয়াহেদ, সাহিত্য পরিষদ মাধবপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ মুশীরুল হোসাইন।