দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না ॥ সরকার নিযুক্ত আইনজীবী যুক্তিতর্কে অংশ নেননি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচংয়ের শেখের মহল্লার ইসলাম উদ্দিন হত্যা মামলায় এক প্রবাসীকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও অর্থদ- দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে এ মামলায় আরও ১৫ আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়। গতকাল রবিবার দুপুরে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ এসএম নাসিম রেজা এ রায় দেন। রায়ে ওই আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদ- দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রুখসানা পারভীন চৌধুরী। তবে রায়ের সময় দ-প্রাপ্ত আসামি তোফাজ্জল হোসেন পলাতক ছিল। এ ছাড়া অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
ওই কোর্টের পেশকার সৈয়দ গোলাম হাদি জুয়েল জানান, বানিয়াচং সদরের শেখের মহল্লা গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের সাথে একই এলাকার আব্দুল হান্নান গংদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে আসামিরা তার উপর মারাত্মকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ২০০৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সকালে আসামিগণের বাড়িঘরে ইসলাম উদ্দিনকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাতেই ইসলাম উদ্দিন মারা যায়। এ ঘটনায় ইসলাম উদ্দিনের পুত্র মাঈন উদ্দিন বাদি হয়ে পরের দিন ২৩ সেপ্টেম্বর বানিয়াচং থানায় হান্নানসহ ১৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরই এ মামলার আসামি তোফাজ্জল হোসেন দুবাই চলে যায়। অপর আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে কারাভোগ করে জামিন লাভ করে। ২০১৮ সালের ১৪ জানুয়ারি বানিয়াচং থানার তখনকার এসআই জিএম আসলামুজ্জামান চার্জশীট দাখিল করেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেয়া হয়।
এ মামলায় হান্নান মিয়া, ইসরাইল, কিলান মিয়া, আহেদ আলী, হাসেন মিয়া, হাসিম মিয়া, আজিদ, আক্তার মিয়া, লেদু মিয়া, সেতু মিয়া, হাদিস মিয়া, সামসু মিয়া, সেবুল মিয়া ও জমসেদ আলীকে খালাস দেয়া হয়। তবে দ-প্রাপ্ত আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। মামলার রায়ের পর বাদী আক্ষেপ করে বলেন, এ রায়ে তিনি সন্তোষ্ট নন। শুরু থেকে দ-প্রাপ্ত আসামি পলাতক। এ ছাড়া সকল আসামিগণ তার পিতাকে অমানসিকভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুখসানা পারভীন চৌধুরী বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তার ১৫ জন আসামিকে বিজ্ঞ বিচারক খালাস দিয়েছেন। তিনি বলেন বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছেন আসামীরা নিহত ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করেছে, আর চিকিৎসক বলেছেন অস্ত্রের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে, দ-প্রাপ্ত আসামি তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে আদালতে কোন আইনজীবী ছিলেন না। ফলে সরকার থেকে তার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী আসামী তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে যুক্তিতর্কে অংশ নেননি।