হবিগঞ্জের সকল ব্যাংক বীমা ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের উদ্যোগ ॥ ব্যাংকারদের সাথে মতবিনিময়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের শিল্পাঞ্চল খ্যাত অলিপুরে পূবালী ব্যাংক সুতাং শাখার এটিএম বুথে ডাকাতির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে ডাকাতরা। ওই সময় ব্যাংকে থাকা গার্ড হইহুল্লুর করলে ডাকাতরা ব্যাংকে হানা না দিয়ে এটিএম বুথে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। ডাকাতদের আক্রমণে এটিএম বুথের সফট্ওয়্যার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ডাকাতরা কোন টাকা নিতে পারেনি। ঘটনার সময় ওই বুথে ১৮ লাখ টাকা ছিল। পরদিন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শায়েস্তাগঞ্জ থানাকে অবহিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গত কয়েকদিন আগে সংঘটিত হয় এই ঘটনা। পূবালী ব্যাংকের এটিএম বুথে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ব্যাংকারদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। বিষয়টি জেনে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা পিপিএম বিপিএম হবিগঞ্জের সকল ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নেন। পুলিশ সুপারের উদ্যোগের বিষয়টি মোবাইল ফোনে হবিগঞ্জ ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়।
এরই অংশ হিসেবে ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয় নির্ধারণে ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সার্বিক সহযোগিতায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সদর থানা পুলিশ। ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন সভাপতি মোঃ মর্তুজ আলীর সভাপতিত্বে ও সদর মডেল থানার এসআই জুয়েল সরকারের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম পিপিএম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনতা ব্যাংকের ডিজিএম মোঃ কেএম ওবায়দুর রহমান, হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী, ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তাদের আলোচনায় অভিযোগ উঠে- এটিএম বুথে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিকিউরিটি গার্ডরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। তাছাড়া প্রতিটি ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ব্যাংক ব্যবস্থাপকগণ জানান, তারা ইচ্ছে করলেই ব্যাংকে সিসি টিভি ক্যামেরা লাগাতে পারেন না। প্রতিটি শাখায় সিসি ক্যামেরা লাগাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হবে ওই টাকা খরচ করে ক্যামেরা লাগাতে হলে বিষয়টি হেড অফিসকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হবে। হেড অফিসের অনুমতি না নিয়ে টাকা খরচ করার এখতিয়ার তাদের নেই। তবুও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়।
বানিয়াচঙ্গ থেকে আক্তার হোসেন আলহাদী জানান, বানিয়াচঙ্গে ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় থানার অফিস কক্ষে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন এর সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় থানার ওসি মোঃ এমরান হোসেন বলেন, ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগসহ নিরাপত্তার বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত করার জন্য আহবান করা হয়েছে। এসময় ব্যাংক, বীমা ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ থানার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।