হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজবাহ ভূঁইয়া ও তার ভাই চেয়ারম্যান নূরুল হক ভূঁইয়ার যুদ্ধাপরাধের তদন্তপূর্বক বিচার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল হক ভূঁইয়ার যুদ্ধাপরাধের তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ। সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান। এ সময় তাঁরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি হয়েও অত্যন্ত সুকৌশলে অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির দলের বড় পদ বাগিয়ে নিয়েছেন নূরুল হক ভূইয়া ও তার ভাই মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া। একাধিকবার তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভরাডুবি উপহার দিয়েছেন। শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধী হওয়ার কারণে তাকে মানুষ গ্রহণ করেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের লুটপাট, হত্যা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিয়ে কথা বলার সাহস কারও নেই। কেউ কথা বললেই তাকে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা দিয়ে ঘায়েল করা হয়। এখন মুক্তিযোদ্ধারা তাদের এ অপকর্ম নিয়ে কথা বলায় তাদের বিরুদ্ধেও মামলা মোকদ্দমা ঠুকে দিয়েছেন অভিযুক্ত দুই ভাই। মুক্তিযুদ্ধকালীন তাদের অপকর্মের বিষয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁরা এসব ঘটনার তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান খান বাচ্চু। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একাত্তরে হত্যা, লুন্ঠন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে গত ২৩ আগস্ট ঢাকার ট্রাইব্যুনালে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া, তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক ভূইয়া, আলী রেজা ও সিদ্দিক আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর থেকেই নিজেকে বাঁচাতে মিসবাহ ভূইয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে আসছেন। তিনি বলেন- ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আজমিরীগঞ্জে লঞ্চ যোগে প্রচারণায় এসেছিলেন সে সময় মিজবাহ উদ্দিন ভুইয়া ও তার ভাই নূরুল হক ভূইয়া আজমিরীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু লঞ্চ ঘাটে ভিড়াতে বাধা প্রদান করেন। পরে বঙ্গবন্ধু লঞ্চ থেকে ভাষন প্রদান করেন এবং জনতা ও নৌকা মাঝি তার ছেলের সহযোগিতায় মাজার জিয়ারত করে আজমিরীগঞ্জ ত্যাগ করেন।
তিনি আরো বলেন- গত ৫ সেপ্টেম্বর মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন তিনি ১৯৭০ সালে নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। এটি একটি মিথ্যা তথ্য। সেই সময় আমি সেই স্কুলের একই ক্লাসের ছাত্র ছিলাম। আমার সাথে ছিলেন মঞ্জু কান্দি রায়, গোলাম মোস্তাফা, তফসির মিয়া, আজিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, খালেদুজ্জামান, মাসুদুর রহমান আনসারী, ফেরদৌস মিয়া, জামাল মিয়া, মিজবাউর রহমান আনসারীসহ আরও অনেকে। কোন সহপাঠী বন্ধু যদি বলে মিজবাউদ্দিন ভূইয়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল তাহলে জনতার আদালতে আমার বিচার হবে। তিনি বলেন- মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া ও তার ভাই নূরুল হক ভূইয়া ১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের নৌকা মার্কার বিপক্ষে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের পক্ষে প্রচারনা করেছেন এবং ফজলুর রহমানকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা, শরিফপুর নামক একটি লঞ্চ ও দিদার নামক ১০টি নৌকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কাকাইলছেও বাজারের মিটিংয়ে বাধা প্রদান করেছেন। বাধ্য হয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিএনপি নেতা মহিবুর সওদাগরের মার্কেটে ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় মিটিং করেছিলেন। মিজবাউদ্দিন ভূইয়া বিগত চারটি উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে জনগণের মেন্ডেট নিতে পারেননি। আর এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদেরকে আওয়ামী লীগের ভাইটাল পদে পদায়ন করছেন। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এটা কারো ব্যক্তি সম্পত্তি নয়। ১৯৬৯ সালে মিজবাউদ্দিন ভূইয়া গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় কর্মী ছিলেন দাবি করেছেন। এটিও মিথ্যা কথা। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন, আনন্দপুরের নজরুল ইসলামসহ যারা আইয়ুব খানের ছবি ভাংচুর করেছিল সেই সব ছাত্রদের কয়েকজনকে নুরুল হক ভূইয়া ও মিজবাউদ্দিন ভূইয়া শারীরিক শাস্তি দিয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে এমএনএ প্রার্থী কর্নেল (অবঃ) আব্দুর রব ও এমপিএ প্রার্থী গোপাল কৃষ্ণ মহারতেœর পক্ষে নির্বাচনে কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন মিজবাউদ্দিন ভূইয়া। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ সময় নির্বাচনী প্রচারের জন্য তিনিসহ মমিন খান, মুতাব্বির হোসেন একটি নৌকা প্রতীক কাকাইলছেও বাজারে লাগাইতে গেলে নুরুল হক ভূইয়া আমাদের গুলি করার হুমকি দিয়েছিলেন। তারা দুই ভাই রফিক আহমদের পক্ষে আম মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছেন। নুরুল হক ভূইয়া রফিক আহমেদের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন এবং কাকাইলছেও ইউনিয়নের যাবতীয় খরচ তিনি বহন করেছেন। ১৯৭২ সালে আজমিরীগঞ্জ থানার রিলিফ কমিটির সভাপতি ছিলেন নুরুল হক ভূইয়া এমন দাবি মিজবা ভূইয়া করেছেন। এটিও একটি মিথ্যা তথ্য। প্রকৃতপক্ষে রিলিফ কমিটির সভাপতি ছিলেন অলিউর নবী বরধন মিয়া এবং কাকাইলছেও কমিটির সভাপতি ছিলেন অশোক কুমার রায়। অথচ যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশে কালোবাজারে চিনি বিক্রির দায়ে নুরুল হক ভূইয়ার বিরুদ্ধে চোরাচালান মামলা এখনও চলমান। মামলা নং ১৬/৮৭ যার ফাইল টাকা দিয়ে গায়েব করে রেখেছিল প্রায় ৩০ বছর। ১৯৭১ সালের ৮ই ডিসেম্বর। আজমিরীগঞ্জ মুক্ত দিবস। সিভিল অপারেশনে অনেক রাজাকার আল বদরকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু দুইজন হেভি ওয়েট রাজাকার আলী রেজা এবং সিরাজ মিয়াকে পাওয়া যায়নি। ওই দিন রাতে মেঘনা রিভার ফোর্স একটি কার্গো ও একটি গানবোর্ড যুদ্ধ করে আটক করে এবং প্রায় ৩০ জন রাজাকারকে হত্যা করে। পরে পালানোরত শসস্ত্র ১১ জন রাজাকারকে দাশ পার্টির কাছে সোপর্দ করে। কিন্তু নুরুল হক ভূইয়া ও মিজবা উদ্দিন ভূইয়া তখন খুব অনুনয় বিনয় করেছিল তাদের হত্যা না করার জন্য। তবে দাশ পার্টি অনর ছিল হত্যা করার জন্য। কারণ রাজাকারদের কাছে অস্ত্র ছিল। এই বিষয়টিকে মিজবাউদ্দিন দাবি করেছেন তিনি রাজাকার ধরেছেন। আমাদের কথা খুব ষ্পষ্ট, যে মুক্তিযুদ্ধে যায় নাই, যারা রাজাকার লালন করেছে, পাক বাহিনীর সহযোগী হয়ে কাজ করেছে, লুটপাট নিয়ে ব্যস্ত ছিল, পিচ কমিটির সদস্য ছিল তারা কিভাবে দাবি করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি? তাই আজ আপনাদের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের জীবন থাকতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত হতে দেব না। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নুরুল হক ভূইয়া ও মিজবাউদ্দিন ভূইয়ার মালীকানাধীন তিনটি লঞ্চ আনন্দপুর, শরীফপুর ও আজমিরীগঞ্জ এর মধ্যে আনন্দপুর নামক লঞ্চটি পাক বাহিনীকে দিয়েছিল চলাচলের জন্য। এবং শরীফপুর ও আজমিরীগঞ্জ নামক দুইটি লঞ্চে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে ও টিক্কা-ইয়াহিয়ার ছবিতে মালা পরিয়ে দাপটের সাথে লাল কার্ড (ডান্ডি কার্ড) নিয়ে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যা এলাকার প্রবীনগণ এখনও অবগত আছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে শরীফপুর নামক লঞ্চটি পাক বাহিনী ভৈরব বাজারের লুন্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান মালামাল দিয়ে বোঝাই করেছিল পালানোর জন্য। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে লঞ্চটি দ্রুত ঘাট ত্যাগ করে। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে লঞ্চের উপরের ছাদ উড়ে যায় এবং একজন স্টাফ মারা যায়। শরীফপুর লঞ্চটি তখন মালামাল নিয়ে সরাসরি নুরুল হক ভূইয়ার বাড়ির ঘাটে চলে আসে এবং রাতের আধারে লুণ্টিত মালামাল উঠানো হয়। স্টাফের লাশ কাকাইলছেও দাফন করা হয়। ১৯৭১ এর ১০ ডিসেম্বর মেঘনা রিভার ফোর্স কমান্ডার ফজলুর রহমান চৌধুরী ও দাশ পার্টির সেকেন্ড ইন কমান্ড ইলিয়াছ চৌধুরী কর্তৃক আটককৃত নুরুল হক ভূইয়াকে রমনী চৌধুরী বাড়িতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে লুন্টিত মালামাল, কিছু অস্ত্র, আলী রেজা গংয়ের সহযোগিতায় শাহানাগরের লুটতরাজ ও হরিলাল দাসের বাড়িতে অগ্নি সংযোগসহ অনেক বিষয় স্বীকার করেন। পরে নুরুল হক ভূইয়া ও মিজবা ভূইয়ার মা-বাবার আকুতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর কুখ্যাত রাজাকার আলী রেজাকে ১১ তারিখ সকালে হবিগঞ্জ মহকুমা কারাগারে প্রেরণ করি। মিজবাউদ্দিন ভূইয়া বলেছেন- আমি তৈয়বুর রহমান খান ও হাজী খালেদুজ্জামান ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সংবাদ সম্মেলনে এবং মধু মিয়া মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছি। এটি ডাহা মিথ্যা ও বানোয়াট। ২০১৭ সালে বলেছিল তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বির সহায়তায় আর এখন বলছে মধু মিয়ার পরিবারের সহায়তায় আমরা তার বিরুদ্ধাচরণ করছি। আসলে মুক্তিযোদ্ধারা কারও প্ররোচনায় কারও বিরুদ্ধাচরণ করে না। একমাত্র যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধেই মুক্তিযোদ্ধারা কথা বলবে ও বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং জীবন বাজি রেখে অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে। স্বাধীনতা বিরোধী নুরুল হক ভূইয়া ও মিজবাউদ্দিন ভূইয়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাটে ঘাটে শারীরিক মানসিক আর্থিক নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা বন্ধ করার জন্য এবং মিজবাউদ্দিন ভূইয়ার স্বাধানীতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য বিচার দাবি করছি।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মুন্সী আব্দুর রহমান জুয়েল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন- ১৯৭১ সালে নূরুল হক ভূইয়া গং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া গংদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উপস্থাপন করেন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-দিশেহারা মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া গং একেক সময়ে একেক ধরণের বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ভুল বুঝিয়ে মামলা চলাকালীন অবস্থায় মিথ্যা তথ্য প্রচার করছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বলেছি- ১৯৭১ সালে প্রকাশ্য দিবালোকে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী নূরুল হক ভূইয়া, তার ভাই মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া, আলী রেজা, সিদ্দিক আলী বিথঙ্গল গ্রামের আদম আলী, ওয়াহাব মিয়া, লক্ষন সরকার, আরাদন সরকার ও প্রমোদ রায় এই পাঁচজনকে গুলি করে খুন করেছে, লুটতরাজ করেছে, অগ্নিসংযোগ করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে।
এসময় ওয়াহাব মিয়া খুন হলেও এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তার ভাই মধু মিয়া বর্তমানে কারাগারে আছে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান খান বাচ্চু বলেন, মধূ মিয়াকে আমি চিনি না। যুদ্ধাপরাধ মামলা দায়েরের পর তার নাম শুনেছি। তবে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দীন বলেন ১৯৭১ সালে মধূ মিয়ার বয়স ছিল ৯/১০ বছর। মিসবাহ ভূইয়া ২০১৭ সালে সাংবাদিক সম্মেলনে ঐ ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, সে ও তার ভাই অপহৃত মহিলাকে উদ্বার করতে গেলে ৬/৭ জন মারা যায়। এতেই প্রমাণিত হয় কারা তাদের হত্যা করেছিল। এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মিজবাহ উদ্দিন ভূইয়া গত ৩ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মলেনে ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেছেন তিনি এবং তার ভাই নুরুল হক ভূইয়া ঐ সময় বিথঙ্গল গ্রামে বৈধ বন্দুক নিয়ে উপস্থিত ছিলেন এবং এলোপাতাড়ি আক্রমনে ৬/৭ জন লোক মারা গেছে। যা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। “দাস পার্টির খোঁজে” মুক্তিযুদ্ধের দালিলীক বইটিকে মিসবাহ ভূইয়া অস্বীকার করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান বলেন মিজবাহ উদ্দীন ভুইয়ার মানসিক সমস্যা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রহিম জুয়েল, দাস পার্টির সেকেন্ড ইন কমান্ড ইলিয়াছ চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা মর্তুজ আলী, আক্কেল আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী, হরেকৃষ্ণ দাস, সুনীল দাস, মনি লাল দাস, পিতাম্বর দাস, নিখিল দাস, রাখেশ সরকার, হেমেন্দ্র মাস্টার, দিলীপ চৌধুরী, রজনী, ছোবহান মিয়াসহ ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।