ওসি তদন্ত বললেন নিহত ইয়াকুত আলী ও আহত রমজান আলী চিহ্নিত চোরাকারবারী ॥ তারা ভারতে মালামাল চোরাই পথে ক্রয় বিক্রয় করতো

কাজী মাহমুদুল হক সুজন ॥ চুনারুঘাটের বাল্লা সীমান্তের টেকেরঘাট গ্রামে দু’দল চোরাকারবারীর সংঘর্ষে ইয়াকুত (৪৫) নামের এক চোরাকারবারী নিহত হয়েছে। রমজান আলী (৪৮) নামে আরেক চোরাকারবারী গুরুতর আহত হয়েছে। শনিবার রাত প্রায় ১০টায় গাজীপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম টেকেরঘাটে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহতের বাবা আব্দুল খালেক জানান, ইয়াকুতের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় ইয়াকুত গভীর রাত অবদি বাড়ির বাহিরে হাটাচলা করতো। এতে রমজান আলীরা তাকে বিজিবির সোর্স ভাবতে থাকে। ইতিমধ্যে বিজিবি অনেকগুলো চোরাচালান আটক করলে রমজান আলীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে তারা ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে আবাদি জমিতে রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় ইয়াকুত মিয়াকে দেখতে পান। তখন দা ও ফিকল হাতে জমশের আলীর দুই পুত্র রমজান আলী (৪৮) ও দরবেশ আলী (৩৫), খালেকের পুত্র জমরুত মিয়া (৪০), জমরুত মিয়ার পুত্র নাইম (২০) দেশিয় অস্ত্র হাতে ঘটনাস্থলেই ছিল।
সুত্র জানায়, রমজান এবং ইয়াকুত ভারতে চুরি করতো। সাম্প্রতিক সময়ে তারা চুরি ছেড়ে দিয়ে চোরাচালানীতে যোগ দেয়। তারা স্থানীয় আসামপাড়া বাজার থেকে মটরশুটি, ছোলা, ছানার ডাল ও ইলিশ মাছ কিনে ভারতের ত্রিপুরাতে পাচার করতো। চোরাচালানের মালামাল কেনা-বেচা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইয়াকুত ও রমজানকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্মরত চিকিৎসক ইয়াকুতকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার লাশ হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়। আশংকাজনক অবস্থায় রমজানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। রমজানের অবস্থা আশংকাজনক। এ ছাড়া সংঘর্ষে আরও ৫ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিজিবি চিমটিবিল কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আইয়ুব আলী বলেন, বিজিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ইয়াকুত বিজিবির সোর্স ছিল না। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে জড়িত যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশই তালিকাভুক্ত চোরাকারবারী।
এদিকে রবিবার সকালে মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেল এএসপি নাজিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানার ওসি তদন্ত চম্পক দাম জানান, নিহত ইয়াকুত আলী ও রমজান আলী চিহ্নিত চোরাকারবারী। তারা ভারতে মালামাল চোরাই পথে ক্রয় বিক্রয় করে। চোরাচালানের মালামাল কেনা-বেচা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ইয়াকুত আলী নিহত হয়েছে।