স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জ পৌরসভায় শুরু হয়েছে ১২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ। এসকল উন্নয়ন কাজে প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণে কাজ। হবিগঞ্জ পৌরসভায় বাস্তবায়নাধীন তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন (সেক্টর) প্রকল্পের আওতায় রাস্তা, ড্রেন নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ১২ কোটি ১২ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৭৪ টাকার কাজ শুরু হয়েছে। এ উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে ৯ কোটি ৬৮ লক্ষ ২৮ হাজার ১৪৬ টাকার ড্রেন নির্মাণ। সাথে সাথে রয়েছে ৮ টি আরসিসি রাস্তা নির্মাণ। ইতিমধ্যে গত বুধবার একই দিনে ৮ টি আরসিসি রাস্তা নির্মাণের ফলক উন্মোচন করেছেন হবিগঞ্জ-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির। এ সকল আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৪ লক্ষ ৫ হাজার ৭২৩ টাকা।
ইউজিআইআইপি-৩ এর আওতায় এ সকল উন্নয়ন কাজের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে বাইপাস রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে রেলওয়ের পুকুর হতে রাজনগর কার্লভার্ট হয়ে আনসার ভিডিপি কার্লভার্ট পর্যন্ত বড় আরসিসি ড্রেন নির্মাণ। এ ড্রেন নির্মাণ করতে ব্যয় হবে ৬ কোটি ৮০ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪ শ ১৬ টাকা।
পৌর মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ‘হবিগঞ্জ শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল জলাবদ্ধতা। আমি নির্বাচনের পূর্বে পৌরবাসীর কাছে অঙ্গিকার করেছিলাম জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। সেই অঙ্গিকার পুরনে আমি ইতিমধ্যে পৌরসভার পানি নিস্কাশনের বড় ড্রেনগুলো, যা ছিল অচলপ্রায়, সেগুলো খনন করে সচল করেছি। যে কারণে এবছর ব্যাপক বৃষ্টিপাত হলেও উল্লেখযোগ্য কোন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে ইউজিআইআইপি-৩ এর আওতায় বাইপাস সড়কের পূর্বপার্শ্ব ঘেষে প্রায় পৌনে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বড় ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ড্রেন নির্মাণ শেষ হলে পৌরএলাকার পানি নিস্কাশনে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধিত হবে।’
১২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে শহরের প্রধান সড়কের পূর্বপাশ ঘেষে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ। এ ড্রেন তিনকোনা পুকুর পাড় হতে শুরু হয়ে শেষ হবে চৌধুরী বাজার ট্রাফিক পয়েন্ট পর্যন্ত। এ ড্রেনের সাথে নির্মাণ করা হবে স্লাবও। ইতিমধ্যে কোর্ট মসজিদ হতে তিনকোনা পুকুরপাড় পর্যন্ত প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান আছে যা পুরাতন হাসপাতাল সড়ক পর্যন্ত বর্তমানে দৃশ্যমান আছে । তিনকোন পুকুরপাড় হতে চৌধুরীবাজার ট্রাফিক পয়েন্ট পর্যন্ত স্লাবসহ এ ড্রেন নির্মাণ করতে ব্যয় হবে ২ কোটি ২৬ লক্ষ ৯শ টাকা। মেয়র মিজানুর রহমান এ ড্রেন সম্পর্কে বলেন,‘ দীর্ঘদিন যাবত প্রধান সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণের দাবী ছিল পৌরবাসীর। ড্রেনের অভাবে প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। আশাকরি এ ড্রেন নির্মাণ শেষ হলে প্রধান সড়কের কোথাও পানি জমবে না।, তিনি বলেন ‘পৌরবাসীর সমস্যা সমাধান করতেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে এ ড্রেন নির্মাণ করছি।’
এ উন্নয়ন কাজের মধ্যে ড্রেন নির্মাণ হিসেবে আরো অর্ন্তভূক্ত আছে ৬১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৮শ ৩০ টাকা ব্যয়ে কর্মকার পট্টি এলাকার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ।
১২ কোটি টাকার উন্নয়নে যে আরসিসি রাস্তাগুলো অর্ন্তভূক্ত রয়েছে সেগুলো হলো ৪৭লক্ষ ৫৬ হাজার ৪শ ৬৫ টাকায় উমেদনগর কবরস্থান হতে বানিয়াচং রোড পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, ৮০ লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৭৪ টাকায় বানিয়াচং সওজ রাস্তা হতে শাহপরান মাদ্রাসা হয়ে উমেদনগর পৌর উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন সওজ রাস্তা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, ১৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮৮২ টাকায় ২নং পুল এলাকার সওজ রাস্তা হতে বাইপাস রাস্তা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, ৪৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ১শ ৯৭ টাকায় কোর্ট ষ্টেশন এলাকায় পৌরসভার রাস্তা হতে জনাব মোঃ ফজলুর রহমান সাহেবে বাসা হয়ে শেখের মহল্লা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, ১৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৫৬৭ টাকায় কোর্ট ষ্টেশন এলাকার চাষী বাজার হতে কাউন্সিলর আলমগীর সাহেবের বাসা হয়ে বাইপাস রাস্তা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা, ১৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩ শ ৪৫ টাকায় জেকে এন্ড এইচকে উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের পাশ্ববর্তী সওজ রাস্তা হতে জনাব আব্দুল্লাহ সাহেবের বাসা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, ১১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬শ ৫২ টাকায় শায়েস্তানগর এলাকার কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তা হতে কাউন্সিলর জনাব উম্মেদ আলী শামীম সাহেবের বাসা হয়ে জনাব নিজাম সাহেবের বাসা পর্যন্ত আরসিসি রাস্তা নির্মাণ ও ১২ লক্ষ ৫৬ হাজার ১ শ ৪১ টাকায় যশের আব্দা এলাকার খোয়াই বাধ হতে মাদ্রাসা পর্যন্ত এইচবিবি রাস্তা নির্মাণ।