স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলায় প্রথমবারের মত ৩ করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ২টি ইউনিয়নকে প্রশাসনিকভাবে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বানিয়াচং থানার ৫ জন কর্মকর্তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঐ পাচজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত হওয়া ঐ তিনজন ১৭ এপ্রিল পুলিশের চেকপোস্টে আটক হয়েছিলেন। তারা তিনজন বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছিলেন। পরবর্তীতে ১৮ এপ্রিল ঐ তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে ২০ এপ্রিল তাদের করোনা পজিটিভ আসে।
করোনা পজিটিভ হওয়া ঐ তিনজন হলেন ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের মীরমহল্লা গ্রামের আলী আহমেদের পুত্র উজ্জ্বল মিয়া (১৬) সে পেশায় একজন নির্মান শ্রমিক। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে নোয়াখালী জেলায় কর্মরত ছিল। অন্য দুজন হলেন ৩নং ইউনিয়নের বানেশ^র বিশ^াষের পাড়া গ্রামের রহমত আলীর ছেলে সুমন মিয়া (২২) সে পেশায় নির্মান শ্রমিক। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলা থেকে এসেছিল।
এছাড়া একই ইউনিয়নের মহব্বতখানী গ্রামের আব্দুস শহীদের পুত্র আক্কাস (৫০) সেও একজন নির্মান শ্রমিক। সে কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলায় নির্মান শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিল। প্রশাসন সোমবার দিবাগত মধ্যরাতেই তাদেরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে। দুটি ইউনিয়নে করোনা পজিটিভ তিনজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পরপর বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন ও ৩নং দক্ষিন-পূর্ব ইউনিয়ন দুটিকে লকডাউন ঘোষনা করে।
কিন্তু লকডাউন-কাগজে কলমে ঘোষনা করা হলেও সরেজমিনে দেখা যায়, ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ১নং ইউনিয়নের বড়বাজার ও সারেংবাজার সহ রাস্তাঘাটে অবাধে লোকজন ও পরিবহন চলা চল করছে। টমটম, সিএনজি, মিশুক সহ বিভিন্ন পরিবহনে লোকজনকে গাদাগাদি করে অবাধে চলতে দেখা গেছে। এছাড়া বড়বাজারের কাচা বাজারে বিপুল লোকসমাগমের মাধ্যমে সকালের বাজার সওদা করতে দেখা গেছে। সারেং বাজারে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা বিপুল লোকসমাগম ঘটিয়ে বাজার খোলা রাখা হচ্ছে।
বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ রঞ্জন কুমার সামন্ত জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বানিয়াচঙ্গের ১২ জন শ্রমিককে আটক করে নমুনা সংগ্রহের জন্য থানার ৫ জন কর্মকর্তা হাসপাতালে নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৩জনের প্রজিটিভ আসায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন সেই সন্দেহে ঐ ৫ অফিসারকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। দ্রুতই তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুন খন্দকার বলেন, এ ব্যাপারে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি জনগনকে সচেতন হওয়ার জন্যও তিনি আহবান জানিয়েছেন।
এছাড়া এলাকাবাসী যানবাহন আটক করে খবর দেওয়ার জন্যও তিনি আহবান জানান।