আবুল কালাম আজাদ ॥ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে একটি রিকোয়েস্ট করি এই মুহূর্তে যদি অন্তত তাকে (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) একটু পরিবর্তন করা যায়। অন্তত বিশ্বাস করার মত যদি কোনো মন্ত্রী দিতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যদি সেনাপতি ঠিক থাকে সেখানে যুদ্ধ করে শহীদ হলেও মনে কষ্ট থাকে না। তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার আগে কোনো মানুষের অন্তিম ইচ্ছা নেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতার কথা শোনার। এবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে লাইভ এসে তিনি এসব কথা বলেন।
লাইভের শুরুতেই সুমন বলেন, শুক্রবার নামাজের আগে আমি আমার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে দুটি কথা বলতে চাই, আপনি জানেন যে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওইদিনই আপনার সামনেই স্বাস্থ্য সচিব এবং মহাপরিচালক দুইজন দুই ধরনের কথা বলেছেন। মাননীয় মন্ত্রী আমি আগেই বলেছি যে, যতগুলা মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হয়েছে তার টপ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিনি প্রশ্ন করে বলেন কেন হবে না মাননীয় মন্ত্রী? এমন একজন মন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আপনি মনে হয় দেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। যে ৩৭ জনকে পেছনে নিয়ে করোনার ব্যাপারে উনি আমাদেরকে সচেতন করতে গিয়েছিলেন। ’ সুমন বলেন, ‘এ ধরনের কথা বলার পর মিনিস্ট্রিয়াল রেস্পন্সিবিলিটি অনুযায়ী তাৎক্ষণাৎ রিজাইন করার কথা ছিল। গত বছর (২০১৯ সাল) যখন দেশের ৯০ হাজার লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, ঢাকায় যখন মহামারি হয়েছিল তখন তিনি থাইল্যান্ড না কোথায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘আমি একটা কথা বলতে চাই। নিউজিল্যান্ডে লকডাউন থাকা অবস্থায় একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুধু সীবিচে বেড়াতে যাওয়ায় তাকে ডিমোশন দিয়ে অন্য মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে। ’
সুমন বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে ও স্বাস্থ্য সচিব এবং মহাপরিচালক মিলে একটা সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে, এন-৯৫ মাস্কের কথা বলা হয়েছে, যে মাস্কের কারণে আজকে ডাক্তাররা (স্বাস্থ্য ঝুঁকি) হুমকিতে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এই দুর্নীতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে। ‘
ইসলামের চতুর্থ খলিফার একটি উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার সুমন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মাননীয় নেত্রী আপনার কাছে কোনো কথা বলব, অনেকগুলা কথা আছে। হযরত আলী (রা.) একটা কথা বলেছেন, আপনারা কখন বুঝবেন যে এই সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে, কখন বুঝবেন যে এটা কিয়ামতের লক্ষণ? যখন দেখবেনয মুর্খরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মুর্খরা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়ে বসে আছেন। যখন দেখবেন ধনীরা কৃপণ হয়ে গেছে। যখন দেখবেন গরিবরা ধৈর্য হারা হয়ে গেছে। ’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী আমি বলছি না তাদেরকে বদলাইয়া দিলেই দিনের মধ্যে সব চেঞ্জ হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষের যে কনফিডেন্ট! মানুষকে জিজ্ঞেস করে দেখুন একটা লোকের কনফিডেন্স আছে কিনা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিষয়ে? যে মন্ত্রীর উপর বিশ্বাস থাকে না এরকম অবিশ্বাস নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়া খুবই দুঃখজনক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ’
করোনায় আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার আগে ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথা শুনতে চান না কেউ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা সুস্থ আছি বা করোনা আক্রান্ত আছি এই দেশে আমাদের একটা শেষ ইচ্ছা এরকম একটা ব্যর্থ মন্ত্রী রেখে আমরা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চাই না। ‘
‘আপনি ছাড়া আওয়ামী লীগ এবং এই সরকারের কেউ অপরিহার্য না। একটা লোক অপরিহার্য না আপনি চাইলেই একটি পরিবর্তন করতে পারেন। ’
‘এমন একটা ক্রাইসিস মোমেন্টে যে লোকটা সামান্য হিসাব বলতে পারে না। ক্যামেরার সামনে যে লোকটা হিসাবের কথাই বলতে পারে না এ পর্যন্ত কত লোক আক্রান্ত হয়েছে। যে মন্ত্রী বারবার ভুল করেন। তার কথা আর কি বলবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আর কোনো কথা বলার নেই আমাদের। ’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর একটা কথা বলতে চাই যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পিপিই বলতে পারে না বলেন পিপিপি, তার মাথায় পার্টনারশিপ বিজনেস। বিজনেস ছাড়া আর তার মাথায় কিছুই নেই। ‘
তিনি বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে বলতে চাইছি। যে এরকম একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে আপনার মত যদি একজন বিশ্বাস করার মত মন্ত্রী না থাকে। তাহলে আমরা মরেও শান্তি পাব না। ’