চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ সারাদেশে করুণার প্রভাবে যখন ঘরবন্দি মানুষ তখন খাবারের জন্য উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করেছে শতাধিক চা শ্রমিক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে তারা বিক্ষোভ করে। এসময় চা শ্রমিকরা দু’মুঠো ভাত দে, দু’মুঠো ভাত দে বলে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকালে তারা বলেন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মরার আগে আমরা খুধার জ্বালায় মরে যাব। চা শ্রমিকরা উপজেলা গেইটের সামনে অবস্থান নিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ তাদের পর্যায়ক্রমে সবাইকে খাবার দিবেন বলে আশ্বস্ত করলে তারা বাগানে ফিরে যায়।
চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালীর ২৪টি চা বাগানে ৪০ হাজার নিয়মিত শ্রমিকদের পাশাপাশি আরো প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক আছেন যাদের বাগানে কোন কাজ নেই। তারা বাগানের বাইরে ছুটা কাজের ওপর র্নিভরশীল। এই শ্রমিকরা চা বাগানের বাইরে ইটভাটা, মাটি কাটার কাজ, ধানকাটা, গৃহস্থালি, রাজমিস্ত্রীর জোগালিসহ নানা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের রোজগারে তাদের সংসার চলে। কিন্তু সারা দেশ লকডাউন হওয়ার পর গত এক সপ্তাহ তাদের কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। তাদের অনেকেই না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। তারা যেমন চা বাগানের মালিক পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না, তেমনি সরকারি সাহায্য থেকেও বঞ্চিত।
এঅবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে শতাধিক অনিয়মিত চা শ্রমিক কোদাল কাঁধে, টুকরি মাথায় নিয়ে খাবারের দাবিতে উপজেলা পরিষদ গেইটে জড়ো হন। খাবারের জন্য তারা সরকারি ত্রাণের দাবি জানান।
চা শ্রমিকরা জানায়, তারা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তারা কোন ত্রাণ এবং সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত পাননি। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে বাঁচান, ঝিয়ের কাজ করেন এমন একজন মহিলা দু চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন দুদিন ধরে আমার ঘরে খাবার নেই, বাচ্চাদের নিয়ে আমি কি করব, কি খাব।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিত রায় দাশ বলেন, প্রথম ধাপে যে পরিমাণ ত্রাণ এসেছিল তা শেষ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ধাপে তালিকা তৈরি করে তাদের সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হবে।