চা বাগানে সরকার ঘোষিত ছুটি নেই
আবুল কালাম আজাদ ॥ করোনা আতঙ্কে চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার ২৩টি চা বাগানের প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক স্বেচ্ছায় ২ দিনের ছুটি পালন করছেন। চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালির শ্রমিক নেতারা সেই ছুটি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার ও বুধবার চা শ্রমিকরা সেই ‘আনলিভ’ ছুটি ভোগ করবেন। চা শ্রমিকরা বছরে ১৪ দিন আনলিভ ছুটি ভোগ করে থাকেন। সেই ছুটি থেকে ২ দিনের ছুটি কর্তন হবে জানান শ্রমিক নেতারা। আজ তাদের এ ছুটি শেষ হচ্ছে। সরকার চা বাগানে ছুটি ঘোষনা না করলে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শ্রমিকদের পুনরায় কাজে যোগদান করতে হবে। এ অবস্থায় চা শ্রমিকদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
বাগানের সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে করোনা আতঙ্ক দেখা দেয়ায় তারা বাগানের সমুদয় কাজ বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছিলো দুসপ্তাহ ধরে। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ উপর মহলের নির্দেশ না থাকায় বাগান সচল রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এ নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিক নেতাদের কয়েক দফা বৈঠক হয়। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ উপরের মহলের সিদ্ধান্ত ছাড়া বাগানের কাজ কাম বন্ধ রাখার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এরই প্রেক্ষিতে সোমাবার বিকেলে শ্রমিক নেতাদের এক জরুরী বৈঠকে মঙ্গলবার থেকে বুধবার বাগানে স্বেচ্ছা ছুটি ঘোষনা করা হয়।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, আমরা চা বাগান ছুটির জন্য সরকার ও বাগান কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন নিবেদন করে আসছি। কিন্তু কেউই আমাদের এ আবেদনে সাড়া দেয়নি। বাগান শ্রমিকরা সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করে চলেছে। চা কারখানাগুলোতেও চলছে কাজ। সারাদেশে সবকিছু বন্ধ থাকলেও চা শ্রমিকদের ছুটি নেই। এতে চা শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। অবশেষে শ্রমিকদের নানা চাপের কারণে আমরা দু’দিন ছুটি ঘোষনা করেছি। বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় তাদের কাজে যোগ দিতে হবে।
চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় ডানকান ব্রাদার্স, ন্যাশনাল টি কোম্পানী, দেউন্দি টি কোম্পানী ও ব্যক্তিমালাকাধীন চা বাগানের সংখ্যা ২৩টি। এতে নিয়মিত শ্রমিক রয়েছেন ৪০ হাজার। তাদের পোষ্যসহ সাধারন শ্রমিক রয়েছেন লক্ষাধিক। ওই শ্রমিকরা এক সাথে দল বেঁধে কাজে যায়। তিনি বলেন, ঘরে ফিরে এসে পরিবারের শিশুদের সাথে মেলা মেশা করে, রান্না-বান্না করে তারা। বার বার হাত ধোয়ার রেওয়াজও চালু হয়নি বাগানগুলোতে। চা বাগানগুলোতে করোনা সতর্কতা এখনো জারি করা হয়নি। চা বাগানে স্বাস্থ্য কর্মীসহ জনপ্রতিনিধিরা এখনো শুরু করেননি করোনা প্রতিরোধ বিষয়ে কোন কাজ। বাগানের অলিগলিতে গড়ে উঠা বিভিন্ন পন্যের দোকানপাট গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। পাড়া-মহল্লার মদের দোকান গুলোও উন্মুক্ত।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সত্যজিত রায় বলেন, চা বাগান বন্ধ করার কোন নির্দেশনা এখনো আসেনি, তবে শ্রমিকদের মাঝে করোনা সর্তকতা বাড়ানোর কাজ চলছে।