নুর উদ্দিন সুমন ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে বিয়ের দাওয়াতে এসে একই পরিবারের তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার চান্দপুর চা বাগান এলাকার একটি জলাশয় থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলো- চুনারুঘাট উপজেলার রামগঙ্গা গ্রামের সেলিম মিয়ার মেয়ে মোছকান আক্তার (১৩), সাজিদ আলীর মেয়ে শামিমা আক্তার (১২) এবং মজিদ আলীর মেয়ে ছানিয়া আক্তার (৯)। তিনজনই ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং একই পরিবারের সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে উপজেলার রামগঙ্গা চা বাগানের সাজিদ আলী তার পরিবার নিয়ে বিয়ে উপলক্ষে চান্দপুর চা বাগানের আলমের বাড়িতে আসে। মঙ্গলবার ছিল বিয়ের দিন। দুপুর ১২টায় তিন বোন সাজিদ মিয়ার ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়–য়া মেয়ে শামিমা আক্তার, তার ভাই মজিদ আলীর মেয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সানিয়া আক্তার ও অপর ভাই সেলিম আলীর মেয়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মুসকানা আক্তার চান্দপুর বাগান পুকুরে গোসল করতে এসে খেলা করার সময় পানিতে ডুবে মারা যায়। তারা কেউই সাঁতার জানতো না। স্থানীয়রা প্রথমে সানিয়াকে ভাসমান অবস্থায় পেলেও অপর দু’জনকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুকুরের দক্ষিণ প্রান্তে পানির নিচে পাওয়া যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফাতেমা হক বলেন, শিশু ৩টি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা গেছে।
সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খায়রুন আক্তার ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, তারা বাগানের আলমের বাড়িতে তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বেড়াতে এসেছিল। কিন্তু তাদের বাড়িতে পুকুর না থাকায় শখের বসে বাগানের বড় পুকুরে গোসল করতে এসে সাঁতার দেওয়ার চেষ্ঠা করে শিশুরা। এক পর্যায়ে তারা পানিতে ডুবে মারা যায়।
চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অসাবধানতাবশত তারা পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেছে। মরদেহগুলো উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপ্রত্যাশিত এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের আহাজারিতে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো এলাকা। বিয়ের উৎসবের আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হয়েছে শোকে।