হবিগঞ্জ শহরে সর্বপ্রথম কবি তাহমিনা বেগম গিনি ছাদ বাগান শুরু করেন
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ শহরের শ্যামলী এলাকা একসময় ছিল তেঘরিয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত। তখনকার সময়ে শ্যামলী এলাকায় চোখে পড়ার মতো তেমন কোন ঘরবাড়ি ছিল না। হাতে গোনা কয়েকটি বাসা-বাড়ি ছিল তাও আবার টিনের। হবিগঞ্জ শহর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কবি ও সমাজকর্মী তাহমিনা বেগম গিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের দিকে ডাক্তার সাহেব (লেখকের স্বামী বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ জমির আলী) হবিগঞ্জে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ওই সময়ে তিনি তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। মাঝে মাঝে হবিগঞ্জ আসতেন। হবিগঞ্জ এলেই তার মন খারাপ হয়ে যেতো, কারণ এত ছোট শহরে তিনি কখনো বাস করেননি। বাবার চাকুরীর সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাকে থাকতে হয়েছে। তিনি ডাক্তার সাহেবকে (স্বামীকে) অনেক বুঝিয়েছেন হবিগঞ্জ ছেড়ে অন্যত্র যেতে। কিন্তু উনার একই কথা তিনি হবিগঞ্জেই থাকবেন এবং এলাকার মানুষের সেবা করবেন। যখন তিনি বুঝতে পারলেন ডাক্তার সাহেব হবিগঞ্জ ছাড়া অন্য কোথাও যাবেন না তখন তিনি উনাকে হবিগঞ্জে স্থায়ী বাড়ি করতে পরামর্শ দেন।
তৎকালীন সময়ে হবিগঞ্জ শহরে পাকা বাড়ি-ঘর তেমন একটা চোখে পড়েনি। শুধুমাত্র তার কথায় স্বামী ডাঃ জমির আলী ইঞ্জিনিয়ার ডেকে এনে প্ল্যান করে শহরের শ্যামলী এলাকায় দোতলা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক বাড়ি তৈরী করেন। অনেকেই বাড়িটি দেখতে তাদের বাসায় আসতেন। সম্ভবত ২০০০ সালে দিকে তিনি তার নতুন বাসায় উঠেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
কবি গিনি বলেন, নতুন বাসায় উঠার পর বাড়িটিকে তিনি তার নিজের মতো করে সাজিয়েছেন। তিনি গাছ এবং ফুল প্রিয় মানুষ, তাই বাড়িটির একটি নির্দিষ্ট অংশ তিনি গাছ ও ফুল দিয়ে সাজান। তিনি গর্ব করে বলেন, হবিগঞ্জে সর্বপ্রথম তিনিই ছাদ বাগান শুরু করেন। তখন অনেকেই তার ছাদ বাগান দেখতে আসতেন এবং বাগানে ছবি তুলতেন। আস্তে আস্তে শ্যামলী এলাকায় বাসস্থান বাড়তে থাকে। সেই সাথে বাড়তে থাকে মানুষের আনাগোনা। ডাক্তার সাহেব (ডাঃ জমির আলী) তার চেম্বার বাসায় নিয়ে আসেন। এর আগে তিনি শহরের বদিউজ্জামান খান সড়কে প্র্যাকটিস করতেন। চেম্বার বাসায় আনার পর এইদিকে লোকজনের পদচারণা বাড়তে থাকে। ওই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভাল ছিল না। কোথাও যেতে হলে রিকশার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। আবার বাসায় আসতে গিয়েও ভোগান্তির শিকার হতে হতো। পরবর্তীতে যখন ডাক্তার সাহেব বাসায় চেম্বার শুরু করেন তখন ডাক্তার দেখাতে এই সড়কে লোকজনের যাতায়াত বাড়তে থাকে। আস্তে আস্তে ওই এলাকার রাস্তাঘাটও ডেভেলপ হয় এবং যানবাহন সংকট দূর হতে থাকে।