বাহুবলে পতিত জমি আবাদ করে সরিষা চাষে কৃষকের সফলতা
মো. মামুন চৌধুরী ॥ সরিষার মধ্যে অন্যতম বিনা সরিষা-৯। অন্যান্য সরিষা চাষের থেকে বিনা সরিষা-৯ চাষে খরচ কম। অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এজন্য জেলার বাহুবল উপজেলার পূর্ব জয়পুর গ্রামের কৃষক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য সরিষার চাষের প্রস্তুতি নেন।
সরিষা চাষে তিনি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের কাছ থেকে গ্রহণ করেন পরামর্শ। পরে পতিত প্রায় ৭০ শতক জমি আবাদ করেন। ১ ডিসেম্বর ক্ষেতে প্রায় ৩ কেজি বীজ বপন করার প্রায় ৭৫ দিনে মধ্যে সরিষা পরিপক্ক হবে। এরপর ক্ষেত থেকে সরিষা সংগ্রহ করা সম্ভব। বিক্রি থেকে ৯০ হাজার টাকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। সরিষা চাষে সফল হওয়ায় কৃষক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য আনন্দিত।
কৃষক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শে তিনি পতিত জমি আবাদ করেন। আবাদকৃত জমিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে প্রদর্শনী বাস্তবায়নের মাধ্যমে বীজ বপন করেন উন্নতজাতের সরিষার বীজ। চাষে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার গাছে গাছে হলুদ ফুল বাতাসে দুলছে। অনেকেই ক্ষেতে এসে ছবি তুলে মুগ্ধ হচ্ছেন। প্রায় ৭৫ থেকে ৮২ দিনের মধ্যে সরিষা পরিপক্ক হলে, সংগ্রহণ করা হবে। সরিষা সংগ্রহ করার পর বিক্রি থেকে প্রায় ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা আসবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, শীতকালীন ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করেন। এ জাতের সরিষা চাষে ঝুঁকি কম। সব মাটিতেই সরিষার চাষ হলেও হালকা দো-আঁশ মাটি সরিষা চাষের জন্য উপযোগী। বৃষ্টিপা সরিষা চাষের জন্য ক্ষতিকর। গাছের দ্রুত বেড়ে ওঠার জন্য আলোর প্রয়োজন।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, বাহুবলে সরিষা নতুন নয়। তবে পূর্ব জয়পুর এলাকায় তেমন একটা চাষ হতো না। এখানে এ ফসলটি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। আগামী মৌসুমে আমরা ব্যাপকভাবে সরিষার চাষ করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, চাকরির পাশাপাশি কৃষি কাজ করেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। এজন্য তাকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি সরিষা করে চাষ করে সফল। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও সরিষা চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। আশা করছি আগামী মৌসুমে সরিষার চাষ বাড়বে।
তিনি বলেন, খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় সরিষা চাষ বৃদ্ধিতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মূলত এটি একটি শীতকালীন সফল। সরিষার পুষ্টিগুণ প্রচুর। বর্তমানে সরিষার কেজি ১২০ টাকার মতো। এখানে ৭০ শতক জমি থেকে প্রায় ১৫ মণ সরিষা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ হিসেবে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকার সরিষার ফলন আশা করছেন।