জমিদার নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হবিগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ ॥ রজনী সাহার বাড়িটি এখন স্কুলের মার্কেট

গোপায়ার জ্ঞানেন্দ্র পাল চৌধুরীর পরিবারের দান করা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয় চৌধুরী বাজার
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ এক সময় হবিগঞ্জ জুনিয়র স্কুল নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে সামনের রাস্তায় যে স্থানে স্কুলের মার্কেট রয়েছে সে স্থানে স্কুলটি ছিল। স্কুলের ভূমিটি রজনী সাহার বাড়ি ছিল। তারা শর্ত সাপেক্ষে স্কুলকে ভূমি দান করেন। পরবর্তীতে বাঘাসুরার জমিদার নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীকে ধরে স্কুলটি তার ভূমিতে স্থানান্তর করা হয়। হবিগঞ্জ শহর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে হবিগঞ্জ কালীবাড়ি পূজা কমিটির সভাপতি বিমল জ্যোতি চক্রবর্তী রঞ্জু এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১৯৩২ সালে তার দাদা বিপিন চক্রবর্তী হবিগঞ্জ শহরের কালীবাড়ি ক্রস রোডে এসে বসবাস শুরু করেন। তার পিতা অ্যাডভোকেট বিনয় ভূষণ চক্রবর্তী। জন্মসূত্রেই হবিগঞ্জ হাই স্কুলের পাশে তাদের বসবাস। তিনি নিজ চোখে দেখেছেন তৎকালীন ও বর্তমান সময়ে শহরের নানা পরিবর্তন।
তিনি বলেন, তখনকার সময়ে শহরের রাস্তাঘাট ছিল ভাঙাচুরা। শহরে চলাচলের জন্য প্যাডেল চালিত রিক্সা ছিল একমাত্র মাধ্যম। ভাড়াও ছিল খুবই কম। শহরে অট্টালিকা বলতে পুরাতন হাসপাতাল সড়কের উমেশ ভবন ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও রাজনগরের মতিন কন্ট্রাক্টরের বাসা, আলমশেঠ বিল্ডিং, কোর্ট স্টেশন এলাকার খোশ মহল বোর্ডিং ছিল উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে কাপড় ব্যবসায়ী কদ্দুছ খান, শংকর বস্ত্রালয়, চৌধুরী বাজারের মুদি ব্যবসায়ী পান্ডব পাল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টি নেতা শংকর পালের পিতা শ্রীশ পাল, হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী ঈশ^র পাল, চৌধুরী বাজারের মুদি মাল ব্যবসায়ী সুকুমার রায়, হরকুমার রায়, পান ব্যবসায়ী মহাদেব রায়, আলম শেঠ ছিলেন উল্লেখযোগ্য। শহরের একমাত্র বাজার ছিল সিনেমা হল বাজার। আর শহরের পুরান বাজার বিওসি ঘাট হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে একটি প্রসিদ্ধ তেলের দোকান ছিল। এ দোকানকে কেন্দ্র করে এ স্থানটি বিওসি ঘাট হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর শহরের চৌধুরী বাজার গোপায়ার জ্ঞানেন্দ্র পাল চৌধুরীর পরিবার বাজারের জন্য দান করেন। দান করা এই ভূমিতেই প্রতিষ্ঠা পায় চৌধুরী বাজার। তখনকার সময়ে এখনকার মতো ব্যবসায়ীদের সংগঠনের ছড়াছড়ি ছিল না। ব্যবসায়ীদের একমাত্র সংগঠন ছিল মার্চেন্ট এসোসিয়েশন। সম্ভবত এর সভাপতি ছিলেন শাহ আলম ওরফে আলম শেঠ।