স্টাফ রিপোর্টার, মাধবপুর থেকে ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার গাবতলী স্ট্যান্ডে সিএনজি অটোরিকশা থেকে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়- পৌরসভাধীন গাবতলী সিএনজি স্ট্যান্ড প্রতি বছরের ন্যায় কর্তৃপক্ষ ১ বছরের জন্য লীজ প্রদান করেন। লীজ গ্রহীতাকে পৌর কর্তৃপক্ষ ও কাউন্সিলররা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য গেলে শ্রমিক লীগ নেতা সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত রফিক ভূইয়া ও শাহ মোঃ জয়নালের লোকজন বাধা প্রদান করে এবং পৌর কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। ওই সময় তারা শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নামে মাধবপুর-নাসিরনগর রুটে চলাচলকারী সিএনজি থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আসছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ চালকরা চাঁদা দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ পরিস্থিতিতে মাধবপুর পৌর প্রশাসক ৬ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে পশ্চিম মাধবপুরের সেলিম মোল্লাকে ইজারাদার নিযুক্ত করেন। ইজারা পাওয়ার পর থেকে সেলিম মোল্লা স্ট্যান্ডের সিএনজি অটোরিকশা থেকে টোল আদায় শুরু করেন। অপরদিকে শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির লোকজন টোল আদায়ে বাধা প্রদান করেন। এ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। এ সময় প্রায় ১৫টি সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর করা হয়। গুরুতর আহত হাজী আরজু মিয়া ফকির (৬৫), শাহীন মিয়া (৩০), হারিস মিয়া (৩৫), জুলহাস মিয়া (৫০), সেলিম মিয়া (৩৫), মোজাহিদ মিয়া (২৫), মরিয়ম জাহান ঝুমা (১৭), আরিফ (২৬), হীরা মিয়া (৫০), তাসলিমা (৪২), আবুল কাশেম (২০), জুনাঈদ মিয়া (২৮), জুয়েল মিয়া (৩২), বিশাল মিয়া (২৬), সোহেল মিয়া (২৩), মেনেকা বেগম (২০), পলাশ মিয়া (৩৫), মোহন মিয়া (২৮), বাবুল মিয়া (২৮), পায়েল মিয়া (১৮)কে ঢাকা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মাধবপুর পৌর কাউন্সিলর বাবুল হোসেন জানান- গাবতলী স্ট্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার পক্ষ থেকে ইজারা দিয়ে আসছি। এবারও ইজারা দিলে সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের লোকজন ইজারাদারকে বাধা প্রদান করে। পরবর্তীতে ৬ সেপ্টেম্বর পৌর প্রশাসক আবারও উম্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে স্ট্যান্ডটি লীজ প্রদান করেন। কিন্তু একটি চাঁদাবাজ গ্রুপ অবৈধভাবে চাঁদা তোলার জন্য বিভিন্নভাবে অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
খোকন মিয়া জানান, সিএনজি স্ট্যান্ড দখল নেয়াকে কেন্দ্র করে ইজারাদারের পক্ষ রাস্তা দিয়ে সিএনজি আসা-যাওয়ার পথে আমাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের এলাকার একজনকে মারধোর করে। এরই জেরে বৃহস্পতিবার সকালে আবারও ঝগড়া হয় এবং এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।