তালিকা থেকে বাদ দেয়ার হুমকি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুরে ক্যাপ্টেন (অব.) কাজী কবিরের কেরামতিতে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে যাছাই বাছাইয়ে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিরবে প্রতারণা করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার কাছে জিম্মি ছিলেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সংস্থা জামুকার একশ্রেণীর কর্মকর্তাদের আতাত করে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভূয়া বলে বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত কাজী কবিরের বিরুদ্ধে তখন কেউ টু শব্দটি করার সাহস পায়নি। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে নানাভাবে নাজেহাল অপমান অপদস্থ করা হতো। সরকার পতনের পর কাজী কবির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মাধবপুর উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী কবির উদ্দিন। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতারণা করে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অহেতুক ঢাকা জামুকা অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাদের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হবে বলে তাদের জানান। এসব করে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। অনেক অসহায় মুক্তিযোদ্ধা নিজের নাম বাদ পড়ার ভয়ে কাজী কবিরকে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
মাধবপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মালেক মধু বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ভয়ের নাম ছিল কাজী কবির। বিগত সরকারের নাম ভাঙ্গিয়ে গায়ের জোরে মাধবপুরে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন তিনি। তার ভয়ে সবাই তটস্থ ছিলেন। বেশি শোষন করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ঢাকা মুক্তিযোদ্ধা অফিস জামুকার একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় কিছুদিন পরপরই সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের কাগজপত্র যাছাই বাছাই করার নামে আতংক সৃষ্টি করতেন। এটা ছিল তার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল। কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তাকে নাজেহাল করে নাস্তানাবুদ করতেন। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর মুক্তিযোদ্ধারা তার অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে কৌশলে বিদেশ পালিয়ে যান তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতারণা করায় মুক্তিযোদ্ধারা তার বিচার দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম ফয়সাল জানান, কাজী কবিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ শুনার পর তাকে যাছাই বাছাই কমিটি থেকে দূরে রাখা হয়েছে।