হবিগঞ্জে সচেতন নাগরিক কমিটির মানববন্ধনে বক্তারা

পঞ্চায়েত কমিটির নামে স্থানীয় সামন্তবাদী কয়েক গ্রাম্য মাতব্বর পাহাড়পুর গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জের বদলপুরে দুই শিশুর লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ শহরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর পাহাড়পুর গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির নেতা দিপেশ সরকার গং কর্তৃক অমানবিক কর্মকান্ডের শিকার হয়ে দুই শিশু প্রলয় দাস (৭) ও সূর্য দাস (৬) এর সমাধিস্থ লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বাধ্য করার প্রতিবাদে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা জজকোর্ট প্রাঙ্গণে ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সচেতন নাগরিক কমিটি, হবিগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সচেতন নাগরিক কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক চৌধুরী মিসবাহুল বারী লিটন, পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব এসএম ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট প্রতীম গোপ। এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা ন্যাপের সভাপতি, বর্ষিয়ান আইনজীবী, বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট স্বদেশ রঞ্জন বিশ্বাস, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মুরলিধর দাস, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট রণধীর দাশ, বাসদের জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মনমোহন দেবনাথ, জেলা ন্যাপের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সুশীতল দেব, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ, আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মনোজিত লাল দাশ, অ্যাডভোকেট মোঃ ফয়সল আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট শিপন পাল, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেত্রী এনি মনি দাস, বাসদ (মার্ক্সবাদী) জেলা সংগঠক শফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনির আহমদ, সাংবাদিক শাহ জালাল উদ্দিন জুয়েল, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ মোহাম্মদ প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, পঞ্চায়েত কমিটির নামে স্থানীয় সামন্তবাদী গ্রাম্য মাতব্বর দিপেশ সরকার, অশীথ সরকার গং পাহাড়পুর গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের দুরভিসন্ধিমূলক নির্দেশে সনাতনী ধর্মীয় রীতিনীতি উপেক্ষা করে একদিকে মানবতাবিরোধী অপকর্ম আরেকদিকে সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে কোমলমতি দুটি শিশুর শোকসন্তপ্ত পিতাকে সমাধিস্থল থেকে সন্তানের লাশ তুলে কোমরে পাথর বেঁধে বস্তাবন্দি করে কুশিয়ারা নদীতে ভাসিয়ে দিতে বাধ্য করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ধরনের একটি জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। মানববন্ধনে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকার প্রতি নিন্দা জানিয়ে বক্তাগণ অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। অন্যথায় পরবর্তীতে সচেতন নাগরিক কমিটি হবিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং এর দায়-দায়িত্ব প্রশাসনকে বহন করতে হবে।