সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়

এস কে কাওছার আহমেদ, আজমিরীগঞ্জ থেকে ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু দিন আগে ঠান্ডাজনিত রোগের কারণে উপজেলার কাকাইলছেও থেকে ১ বছরের মেয়েকে নিয়া আসেন জাফরান মিয়া। হাসপাতালে আসার পর জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড বয় জরুরি বিভাগের একটি ফরম দিয়ে বলেন বাসায় স্যার আছেন গিয়ে দেখিয়ে আসেন। বাধ্য হয়ে রাতের বেলা অসুস্থ অবস্থায় শিশু নিয়ে সেবা নিতে যান ডাক্তারের কোয়ার্টারে। কোয়ার্টারে যাওয়ার পর শিশুর অবস্থা দেখে ডিউটিরত ডাক্তার ভর্তি দেন।
কথা হলে জাফরান মিয়া জানান, রাত ৮ টার দিকে আমার মেয়েকে নিয়ে আসি। কোনো ডাক্তার জরুরি বিভাগে ছিলেন না। জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা একজন ভর্তি ফরম দিয়ে বলেন স্যার বাসায় আছেন। চলে যান বাসায় দেখবেন আমি বলে দিসি।
পলাশ মিয়া নামে একজন জানান, বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে আসার পর একটি কাগজ দিয়ে বলা হয় স্যারের বাসায় চলে যান। আমি কিছু না বলে হাসপাতালের পাশে থাকা কোয়ার্টারে গিয়ে বাবাকে ডাক্তার দেখাই।
আড়াই লাখ মানুষের সেবার প্রাণকেন্দ্র আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দিনের ডিউটির পর থেকে ফাকা থাকে জরুরি বিভাগ। ওয়ার্ড বয় দিয়েই চলে কার্যক্রম। ডিউটিরত ডাক্তাররা থাকেন কোয়ার্টারে। রোগী সিরিয়াস হলে কোয়ার্টার থেকে এসে সেবা দেন দায়িত্বরত ডাক্তার। বেশি সিরিয়াস না হলে ওয়ার্ড বয়দেরকে ফোনের মাধ্যমে বলেন সেবার ধরন।
২৪ ঘন্টাই তালা ঝুলানো থাকে ডাক্তারদের নির্ধারিত বিশ্রামকক্ষে। রোগীরা সন্ধ্যা হলেই সেবা পেতে ভর্তি ফরম নিয়ে ছোটাছুটি করতে হয় ডাক্তারের কোয়ার্টারে। উপজেলার নানা প্রান্ত থেকে রোগীরা আসলে পড়তে হয় ভোগান্তির মধ্যে। অপরদিকে দেখা মিলে রোগীর ভর্তি ফরমের জায়গায় জরুরি বিভাগের ফরম দিয়ে দেওয়া হয় ভর্তি।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের থাকার জন্য নির্ধারিত বিশ্রামের কক্ষ রয়েছে। জরুরি বিভাগের পাশেই থাকার জন্য সকল প্রকার আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো রয়েছে ডাক্তারদের বিশ্রাম কক্ষ।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইকবাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান- তিন শিফটে ডাক্তার নির্ধারণ করা হয়েছে। যার যার নির্ধারিত সময়ে তারা ডিউটি করেন। রাতে কোয়ার্টারে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন ডাক্তার নিজে হাসপাতাল থেকে সেবা দিবেন। রোগী বাসায় না, ডাক্তার হাসপাতালে যাবেন। বাসায় সেবা দেওয়ার বিষয়ে তথ্য পেলে সবাইকে নিয়ে বসে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। ভর্তি ফরম বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন ফরমের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট থাকে না। বেশির ভাগই স্পন্সরের মাধ্যমে আসে।