হবিগঞ্জে এমপি প্রার্থীদের নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ ০৩
হলফনামার হিসেব অনুযায়ী মাহবুব আলীর মাসিক আয় ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ॥ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের মাসিক আয় ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা, দুটি ব্যাংকে তাঁর ঋণ ৫০ লাখ টাকা ॥ অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের উপার্জনের হিসেব খুবই দুর্বল
এস এম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জের ৪টি আসনে এমপি প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলকালে হলফনামার মাধ্যমে নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানের নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ দাখিল করেছেন। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকার পাঠকদের জন্য প্রার্থীদের নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ তুলে ধরা হলো- হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বিমান প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি, একই আসনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় ও আলোচিত ব্যক্তিত্ব ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল এর নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও সম্পদের বিবরণ-
অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি : হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান পরিবাহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী। তিনি মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বানেশ্বর গ্রামের মরহুম আছাদ আলী ও মরহুমা হুসনে আরা বেগমের ছেলে। হলফনমায় তিনি নিজের পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তাঁর নামে অতীতে কোন মামলা ছিল না, বর্তমানেও কোন মামলা নেই। এই অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলীর বার্ষিক আয় কৃষি থেকে ৮০ হাজার টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত রয়েছে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে পান ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ রয়েছে ৩ লাখ ৫০০টাকা, ব্যাংকে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৮ টাকা। তাঁর ২টি গাড়ী রয়েছে, যার মূল্য ১ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া রয়েছে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে ১০ লাখ টাকার। তার স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমি রয়েছে ২৪ বিঘা। যার অর্জনকালীন মূল্য ৪ লাখ টাকা। ৪তলা বিল্ডিং রয়েছে যার অর্জনকালীন মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়াও চা বাগান/রাবার বাগান, মৎস্য খামার ইত্যাদির অর্জনকালীন মূল্য ১০ লাখ ৭২ হাজার ৩৭০ টাকা। অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর স্ত্রীর কাছে নগদ রয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫০০টাকা, ব্যাংকে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৩৫ টাকা। স্ত্রীর স্বর্ণালংকার রয়েছে ৩০ ভরি। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে ১০ লাখ টাকার। এছাড়াও প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীর চা বাগান/রাবার বাগান, মৎস্য খামার ইত্যাদি রয়েছে। হলফনামায় মোঃ মাহবুব আলী অর্জন হিসেবে তাঁর ১০ বছরের দায়িত্বকালীন সময়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের তালিকা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে ৯০ ভাগ। এছাড়াও বাল্লা স্থল বন্দর ৮৫ ভাগ নির্মাণাধীন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন : ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী। তিনি চুনারুঘাটের বড়াইল গ্রামের সৈয়দ এর্শাদ আলী ও আম্বিয়া বেগম চৌধুরীর ছেলে। হলফনামায় তিনি নিজেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর নামে অতীতে যেমন মামলা ছিল না, বর্তমানেও কোন মামলা নেই। তাঁর অন্য কোন আয়ের উৎস নেই। তিনি শুধু আইন পেশা থেকে বার্ষিক ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। এ হিসেবে তাঁর মাসিক আয় ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা। তাঁর কাছে নগদ রয়েছে ১১ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এছাড়া স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার। তাঁর খেলাপী ঋণ রয়েছে পূবালী ব্যাংকে ৪০ লাখ ও সাউথইস্ট ব্যাংক লিঃ এ ১০ লাখ টাকা। তাঁর নিজের নামে স্থাবর ও অস্থাবর কোন সম্পত্তি নেই। হলফনামায় ব্যারিস্টার সুমন উল্লেখ করেন তাঁর স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল : হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল। তিনি বানিয়াচঙ্গের যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা, সাবেক এমপি মরহুম শরীফ উদ্দিন আহমেদ ও হালিমা খানমের ছেলে। হলফনামায় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলএম উল্লেখ করেন। তাঁর নামে অতীত কিংবা বর্তমানে কোন মামলা নেই। তাঁর শুধু কৃষি থেকে বার্ষিক আয় ৩০ হাজার টাকা। ব্যাংকে রয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে পরিবারের যৌথ কৃষি জমি রয়েছে ৬ কেদার। এর মধ্যে ২ কেদার এর মালিক তিনি। যার অর্জনকালীন মূল্য ৪ লাখ টাকা। হবিগঞ্জ শহরে ৬ শতক জায়গায় বাসা রয়েছে। এর ২ শতক এর মালিক তিনি। যার অর্জনকালীন মূল্য ১৫ লাখ টাকা। ঢাকায় ৩ কাটা যৌথ ভূমি রয়েছে। এর ১ কাটার মালিক তিনি। যার অর্জনকালীন মূল্য ১০ লাখ টাকা।