মোহাম্মদ আলী সরকার, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ॥ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেসব জমিগুতে আমনের আগাম রোপন করা হয়েছিলো সে সব জমিগুলোর ধান পেকে যাওয়ায় ওই সব জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়। তবে পুরোদমে এখনো ধান কাটা শুরু হয়নি। পুরোদমে ধান কাটা শুরু হতে আরো এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে অনেক কৃষক জানিয়েছেন।
উপজেলার নিশাপট গ্রামের কৃষক আব্দুল আহাদ জানান, এবার গত বছরের চেয়ে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে মিথিলির প্রভাবে কিছু কিছু জমিতে ধান গাছ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও ওইসব জমির ধান কাটতে অতিরিক্ত মজুরি দিয়ে শ্রমিক সংগ্রহ করেছেন তিনি।
শায়েস্তাগঞ্জের পূর্ব লেঞ্জাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, তার জমিতে ধানের ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু মিথিলির প্রভাবে অধিকাংশ জমির ধান মাটিতে পড়ে যাওয়ায় এখন তিনি অতিরিক্ত মজুরি দিয়ে কৃষি শ্রমিক এনে ধান কাটাচ্ছেন। কিছু কিছু জমির ধান বৃষ্টির পানিতে পড়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি শ্রমিক রুবেল মিয়া জানান, বর্তমান সময়ে সব দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি হওয়ায় এক কের (৩৬ শতক) জমির ধান কাটতে অবস্থান বুঝে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নিয়ে থাকেন। তা না হলে পোষায় না।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব লেঞ্জাপাড়া গ্রামের কৃষক হায়দার আলী জানান, গত কিছু দিন পূর্বে মিথিলির প্রভাবে তার ধানের অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। ধানের গাছগুলো মাটিতে পড়ে যাওয়ায় মেশিনে কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই অতিরিক্ত মজুরিতে কৃষি শ্রমিক দিয়ে এখন ধান কাটাতে হচ্ছে। তবে এবার আমনের ফলন ভালো হওয়ায় তিনি খুশি।
শায়েস্তাগঞ্জের লেঞ্জা পাড়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক ইমরান মিয়া জানান, জমিতে পড়ে থাকা ধানগুলো অন্যান্য জমির মতো ৩ হাজার টাকা কেয়ার করে ধান কাটলেও তাদের পোষাবে না। সে কারণে তারা ৬০০ টাকা করে রোজ প্রতি ধান কাটছেন।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান জানান, এবার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। তবে এখনো পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়নি। পুরোদমে ধান কাটতে আরো দুই এক সপ্তাহ সময় লাগবে। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কারণ, গত বছর ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ ছিল। কিন্তু এবার ব্লাস্ট প্রতিরোধী উন্নত জাতের ধান আবাদ করায় ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, শায়েস্তাগঞ্জে উপজেলার কৃষকর বোরো বীজতলা দেরিতে তৈরি করায় মিথিলার প্রভাবে কোন ক্ষতি হয়নি। অল্প কিছু সবজি জমিতে পানি উঠে গেলেও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকায় তেমন ক্ষতি হয়নি। রোপা আমনের জমির ধান কিছুটা পড়ে গেছে। তাছাড়া তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com