রহিমার জরায়ু ও খাদ্যনালী কেটে ফেলা হয়েছে ॥ কিডনি উধাও হওয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় দি জাপান হসপিটালে এক নারীর টিউমার অপসারণের সময় তার খাদ্যনালি ও জরায়ু কেটে ফেলা এবং কিডনি উধাও করার অভিযোগে ওই হসপিটালের পরিচালক আরিফ ও চিকিৎসক ডাঃ এস কে ঘোষসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর গণ্যে রুজু করতে সদর থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসাইন।
গতকাল সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসাইনের আদালতে বড় বহুলা গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর পুত্র রহমত আলী বাদি হয়ে দি জাপান হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম, কর্মরত গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ এস কে ঘোষ এবং এ কে আরিফুল ইসলামের ভাই তাবির হোসেন ও ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান জনি আহমেদকে আসামি করে মামলা করেন। পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম ও তাবির হোসেন সাবেক ইউপি মেম্বার কাঞ্চন মিয়ার পুত্র।
মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ (৩) ধারা অনুসারে ওই চারজনের নামে মামলার এজাহার (এফআইআর) করতে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দিয়েছেন আদালত। ‘ভুল’ চিকিৎসায় মৃত্যুবরণকারী ওই নারীর নাম রহিমা খাতুন। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল সোমবার ওই নারীর চাচাতো ভাই রহমত আলী আদালতে মামলার আবেদন করেন। বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সত্যতা আছে মর্মে মামলাটি আমলে নেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, পেটের টিউমার নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন রহিমা খাতুন। পরে দালালরা ভুল বুঝিয়ে তাকে দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালে নিয়ে যান।
সেদিন রাতে ডাঃ এস কে ঘোষ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নারীর পেট থেকে টিউমার অপসারণ করেন। সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর রহিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে আবার দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালে আসেন এবং সেখান থেকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকেও চিকিৎসকরা তাকে সিলেটে রেফার করেন। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
সিলেটের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে অভিযোগে বলা হয়, অপারেশনের সময় রহিমার খাদ্যনালি, জরায়ু কেটে ফেলা হয়। এ ছাড়া বাম পাশের কিডনি না থাকায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে অবৈধভাবে চিকিৎসা পরিচালনার জন্য দি জাপান-বাংলাদেশ হসপিটালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলামকে আড়াই বছরের কারাদ- দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযোগ রয়েছে- হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসার সাথে সাথে দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক রোগী ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ এর আগেও মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি রফাদফার মাধ্যমে সমাধান করা হয়।