বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ৭টি জেলে পরিবারকে একঘরে ঘোষণা দিয়ে সমাজচ্যুত করা হয়েছে। সাত পরিবারের মোট ৩৯জন সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সমাজচ্যুত হওয়া ভূক্তভোগীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলার ২নম্বর উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের ঘাগড়াকোনা গ্রামে। রবিবার (২২ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় সরেজমিন ঘাগড়াকোনা এলাকা পরিদর্শনকালে ভূক্তভোগী সাত পরিবারের সাথে আলাপকালে উপরোক্ত তথ্য পাওয়া যায়।
ভূক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঘাগড়াকোনা এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত আলী গংদের ৭পরিবারের সাথে প্রতিবেশী তাহের আলী গংদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ওই ভূমি নিয়ে আদালতে একটি মোকদ্দমাও চলমান। এরই মধ্যে শালিসের মাধ্যমে উভয়পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন এলাকার মাতব্বরগণ। শালিসে আদালত অবমাননা করে মোটা অংকের টাকা জরিমানাসহ একতরফাভাবে লিয়াকত আলী গংদের দোষী সাব্যস্থ করে রায় দেয়া হয়। সেই রায় না মানায় গত শুক্রবার রাতে ঘাগড়াকোনা-মিনাট-খাগশ্রী গ্রামের ছান্দ সর্দার ইউপি সদস্য ইনছাব আলীর বাড়িতে পুনরায় আরেকটি শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রায় না মানার কারণে সেই শালিস বৈঠকে ৩ মহল্লার ছান্দ সর্দার ইনছাব আলী মেম্বার, মোড়ল হাফিজ মিয়া, ইউনুছ মিয়া, সনু মিয়া, সুকুম আলী এবং ইদ্রিস আলীর নেতৃত্বাধীন শালিস বৈঠকে লিয়াকত আলী গংদের ৭ পরিবারকে একঘরে ঘোষণা দিয়ে সমাজচ্যুত করা হয়।
ভূক্তভোগী লিয়াকত আলী জানান, অন্যায়ভাবে গ্রামের মোড়লরা তাদের ৭পরিবারের উপর শালিস বৈঠকের মাধ্যমে মোটা অংকের জরিমানা করেন। আদালতে ভূমি নিয়ে মোকদ্দমা চলমান রয়েছে। অথচ শালিসের রায় না মানায় তাদের একঘরে করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সাত পরিবারের ৩৯জন সদস্য নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করলে হামলা করা হবে মর্মে হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষ। কেউ তাদের সাথে কথা বললে তাদেরও একঘরে ঘোষণা করবে মাতব্বরগণ।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ইনছাব আলী বলেন, আমরা কাউকে সমাজচ্যুত বা একঘরে করিনি। আমরা শালিসে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। তারা গায়ের জোরে চলাফেরা করে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।