শিশুদের মুখে আহার তুলে দেয়ার আর কেউ রইল না
কাজী মাহমুদুল হক সুজন ॥ চুনারুঘাটে সাবেক স্বামীর হাতে নির্মম ভাবে নিহত আকলিমা বেগম (৩৫) এর লাশ দাফন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যার পর জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবর স্থানে মরদেহ দাফন করা হয়। এ সময় নিহত আকলিমার ৭ সন্তান ও আত্মীয় স্বজনের কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠে। এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নানি রহিমা বেগমের কোলে নিহত আকলিমার ৭ মাসের শিশু ছেলে হাবিবুর রহমান শনিবার রাত থেকে মাকে খুঁজছে। সে বুঝতে পারছে তার মা কোথায়। ভাই-বোনদের কান্না দেখে সেও কাঁদছে। শনিবার সন্ধ্যায় খুন হয়েছেন মা আকলিমা। এ ঘটনায় তাদের বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সাথে দুই অভিভাবককে হারিয়ে আকলিমা-সুজন দম্পতির ৭ সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।
চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক জানান- নিহত আকলিমার ভাই রফিক মিয়া বাদী হয়ে ঘাতক সুজন মিয়াকে আসামী করে রবিবার রাতে থানায় মামলা করেছেন। ঘাতক সুজন মিয়াকে রবিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফিরুজ মিয়া জানান- নিহত আকলিমার ৫ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছে। মেয়েরা হলো তাহমিনা আখতার (১৫), তানজিনা আখতার (১৩), মমিনা আখতার (১০), সাবিনা আখতার (৮) ও সাহেদা আখতার (৫)। ছেলেরা হলো আতাউর (৩) ও হাবিবুর (৯ মাস)। খুন হওয়ার ১দিন পর রবিবার সোনাচং গ্রামের আকলিমা-সুজনের বাড়িতে মাতম চলছে। প্রতিবেশীসহ আশপাশের লোকজন অসহায় পরিবারটিকে সান্ত¡না দিচ্ছেন। ভাই-বোনদের কান্না দেখে শিশু হাবিবুরও বোনের কোলে বসে কাঁদছে। পাশে থাকা বোন মমিনা (১০) জানায়- শনিবার রাত থেকে মাকে খুঁজে না পেয়ে ভাইটি কান্নাকাটি করছে। সে এখনো জানে না মা আর বেঁচে নেই।
প্রসঙ্গত, চুনারুঘাট উপজেলার সোনাচং গ্রামে শনিবার সন্ধ্যায় সাবেক স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আকলিমা খাতুন (৩২) নির্মমভাবে খুন হন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় অভিযুক্ত সুজন মিয়াকে আটক করে পুলিশ। সুজন উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের সোনাচং এলাকার বাসিন্দা।
এলাকাবাসী জানান, নিহত আকলিমা ও সুজন দম্পতির ৭ ছেলে মেয়ে এখন কিভাবে বাঁচবে, কে তাদের দেখাশোনা করবে। বৃদ্ধ নানি কি পারবে তাদের ভরণ পোষন করতে? বাবা জেলে, মা কবরে কে দিবে সন্তানদের শান্তনা। এমন প্রশ্ন এখন চুনারুঘাটবাসীর মনে।