স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরতলীতে পরকিয়া প্রেমের বলি ইয়াসমিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সেলসম্যান খলিল মিয়া ওরফে কলিমকে (৫৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খুর্শেদ আলম শহরের বাণিজ্যিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। তবে এখনো এই মামলার প্রধান আসামি জুয়েলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের এখলাছ মিয়ার মেয়ে ইয়াসমিনকে ৫ বছর আগে বিয়ে দেয়া হয় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে জুয়েল মিয়ার সাথে। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে দুটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। নাম জিহাদ ও জিসান। সম্প্রতি জুয়েল মিয়া ওই এলাকার এক তরুণীর সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি আঁচ করতে পারে ইয়াসমিন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এ ঘটনার তিনমাস আগে ইয়াসমিনকে নিয়ে জুয়েল শহরের পশ্চিম ভাদৈ এলাকার রিভারভিউ খান ম্যানসনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নেয়। গত ১১ ডিসেম্বর গভীররাতে পরকিয়া প্রেমের বিষয় নিয়ে জুয়েলসহ উল্লেখিতরা ইয়াসমিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ রান্নাঘরের জানালার গ্রিলে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। সদর থানার এসআই খুর্শেদ আলমসহ একদল পুলিশ রক্তমাখা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় দেয়। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত ইয়াসমিনের মা শাহানা আক্তার এ ঘটনায় হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে রুজুর নির্দেশ দেন সদর থানার ওসিকে। মামলারা আসামিরা হলেন, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে নিহত ইয়াসমিন আক্তারের স্বামী জুয়েল মিয়া (৩০), জুয়েলের পিতা আব্দুল জলিল (৫৫), চাচা রেজ্জাক (৬০), কলিম মিয়া (৫৮), ভাই রুবেল মিয়া (২৫), মা রাবিয়া খাতুন (৫০) ও শাহ আলম (৬৫)।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কলিমকে কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ জানায়, কলিমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। মূল রহস্য জানতে তাকে রিমান্ডে আনা হবে। সে তেঘরিয়া গ্রামের মৃত আতাব আলীর পুত্র। মামলার পর থেকে সে পলাতক ছিল।