মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভাসহ নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট ও মাধবপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ২৭ জনের নাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার তাদের নামের তালিকা ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। তন্মধ্যে হবিগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে ৯ জন, চুনারুঘাট পৌরসভায় ৬ জন, নবীগঞ্জ পৌরসভায় ৮ জন এবং মাধবপুর পৌরসভায় ৪ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। গতকাল আগ্রহী প্রার্থীদের তালিকা স্ব স্ব পৌর কমিটি থেকে জেলা কমিটির হাতে এসে পৌঁছে। পরে একত্রে হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, মাধবপুর ও চুনারুঘাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহীদের নামের তালিকা রাজনৈতিক যোগ্যতা এবং দলের জন্য যাদের ত্যাগ-তিতীক্ষা আছে, যারা দলের নিবেদিত প্রাণ তালিকার ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তালিকায় তাদের নাম উপরের দিকে রয়েছে। কোন নামই তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়নি। সকল নামই কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, মাধবপুরে ৮ জন মেয়র পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী এবং দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের আবেদন ছিল জোরালো। সেই ৫ জনের মধ্য থেকে ১ জনের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। দলীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ না করা, দলের সাথে সম্পৃক্ত না থাকাসহ নানা অভিযোগে এক জনের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির দৈনিক হবিগঞ্জের মুখকে জানান- কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি পৌরসভায় কমপক্ষে ৩ জন আগ্রহী প্রার্থীর নাম প্যানেল করে পাঠানোর বিধান রয়েছে। কিন্তু হবিগঞ্জের ৪টি পৌরসভায়ই তিনের অধিক প্রার্থী রয়েছেন। আমরা সকলের নামই কেন্দ্রে প্রেরণ করেছি। এখন কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে।
হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যাদের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে তারা হলেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হবিগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান মিজান, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মর্তুজ আলী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূরুল আমিন ওসমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শঙ্খ শুভ্র রায়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লন্ডন প্রবাসী মোঃ নূর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল ও পৌর আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শেখ তারেক উদ্দিন সুমন।
চুনারুঘাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যাদের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে তারা হলেন- বিগত পৌর নির্বাচনে ১৪ ভোটে পরাজিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম রুবেল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বজলুর রশীদ দুলাল, সাবেক ছাত্রনেতা মুক্তাদির কৃষান চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, পৌর যুবলীগের আহবায়ক নাজমুল ইসলাম বকুল ও যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট সহিদুল ইসলাম।
নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যাদের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজাহিদ আহমেদ, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল, জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল মালিক, নবীগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলারা হোসেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা তাজুল ইসলাম মিঠু।
মাধবপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী যাদের নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রীধাম দাস গুপ্ত, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হাসান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটু। মাধবপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র হিরেন্দ্র লাল সাহা শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তবে তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পংকজ কুমার সাহা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে জোরে শোরে মাঠে নেমেছেন। মাধবপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ মোঃ সেলিম জানান- আসন্ন পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ত্যাগি নেতাদের নাম জেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলা ও কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা মেনেই আমরা দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করব।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের তফসীল অনুযায়ী আগামী ১৬ জানুয়ারি নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট ও মাধবপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হবিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।