স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কলেজছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের মামলায় আবুল খায়ের আজাদ ওরফে উজ্জ্বল (৩৫) নামে এক আইনজীবীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক সুদীপ্ত দাশ জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। অভিযুক্ত আইনজীবী আবুল খায়ের আজাদ উজ্জ্বল নবীগঞ্জ উপজেলার হালিতলা গ্রামের আব্দুল কদ্দুছ আজাদের ছেলে। তিনি হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে বহিস্কৃত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ উজ্জ্বল হবিগঞ্জ শহরের হরিপুর এলাকায় বাসা বাড়া নিয়ে হবিগঞ্জ কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জ শহরের নোয়াগাঁও এলাকার মংলা মিয়ার কন্যা হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্রীর (২৫) সাথে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে। উজ্জ্বল মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং জীবনসঙ্গী করে নেয়ার অঙ্গীকার করেন। এ কারণে তাদের সম্পর্ক গভীর থেকে আরো গভীরে চলে যায়। সম্পর্কের সুবাদে তারা দুজন বিভিন্ন ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেন এবং যৌথ ছবি ধারণ করেন।
২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর শহরের মোহনপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটির সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল। এছাড়াও একই প্রলোভনে তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়লে হবিগঞ্জ শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে তাকে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় রিপোর্ট আসে মেয়েটি অন্ত:স্বত্ত্বা। এ সময় মেয়েটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে গর্ভপাত ঘটান ওই আইনজীবী। পরে মেয়েটি ওই আইনজীবীকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। ফলশ্রুতিতে নিরুপায় হয়ে ওই ছাত্রী গত ৭ জানুয়ারি আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ সদর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ উজ্জ্বল। গতকাল সোমবার তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম মোল্লা মাসুম ও অ্যাডভোকেট মোঃ ইকবাল ভূইয়া। আসামীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান।
প্রসঙ্গত, ধর্ষণ মামলার আসামী হওয়ায় অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ উজ্জ্বলকে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে দুই বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়।