কারাদ-ের সাথে ভূয়া ডাক্তার কাজল নাথ ও অলক চন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ॥ দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে রোগীদের চিকিৎসা করতেন ভূয়া ডাক্তার অলক চন্দ্র দত্ত
মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে দুই ভূয়া ডাক্তারকে তিন মাস ও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং উভয়কে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদ- করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল রবিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নামের আগের ডাঃ ব্যবহারকারী কাজল দেবনাথ ও অলক চন্দ্র দত্ত নামের দুই ভূয়া ডাক্তারকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেল ও জরিমানা প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন। এময় কাজল দেবনাথকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ও নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- এবং অপর ভূয়া ডাক্তার অলক চন্দ্র দত্তকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডাক্তার না হয়েও নামের আগে ডাক্তার লেখে প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে থানার একদল পুলিশ নিয়ে অভিযান শুরু করে করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন। অভিযানে নবীগঞ্জ পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে দেখা যায় একটি সাইনবোর্ড লেখা রয়েছে- ‘দেবনাথ মেডিকেল সার্ভিস’। এখানে শিশু রোগসহ বিভিন্ন রোগী দেখেন ডাঃ কাজল দেবনাথ। ভিতরে গিয়ে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করলে কাজল দেবনাথ নিজেকে চিকিৎসক প্রমাণ করার স্বপক্ষে কোন সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি। তার কাছে ভারতীয় বিভিন্ন কাগজপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বেবি ফুডসহ ঔষধ বিক্রির কোন লাইসেন্স না থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে তার মালিকানাধীন ফার্মেসিতে ঔষধ বিক্রি করছিলেন। এসব অপরাধে কাজল দেবনাথকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরো দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ে দন্ডিত করা হয়। পরে তার দেবনাথ মেডিকেল সার্ভিস নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করেন ইউএনও।
অপরদিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রসূলগঞ্জ নতুন বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পার্বতী নামের ফার্মেসীতে চিকিৎসার নামে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন অলক চন্দ্র দত্ত। তিনিও নামের আগে ডাঃ লেখে বড় করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তার কাগজপত্র যাচাই বাছাইকালে তিনি স্বীকার করেন তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার চেম্বারে অপারেশনের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া গেছে। একই সামগ্রী দিয়ে একাধিক রোগীর অপারেশন করেন তিনি। তার কাছে কোন সার্টিফিকেট না থাকায় তাকেও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরো দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। পরে উভয় ভূয়া ডাক্তারকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। অভিযানে সহযোগিতা করেন নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ চম্পক কিশোর সাহা সুমন, নবীগঞ্জ থানার এসআই স¤্রাট আহমেদ।
দ-ের বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন জানান, এ অভিযান শুধু শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল গ্রামে-গঞ্জে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সব ভূয়া ডাক্তারদের আইনের আওতায় আনা হবে।