স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বসিনা গ্রামের জিয়াউল হক তাহিরের বিরুদ্ধে স্থানীয় মডেল ব্রিক ফিল্ডের ৫ লাখ ১০ হাজার ইট গোপনে সরিয়ে ফেলে এর মূল্য বাবদ ৩৫ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় কোন কোন ব্রিক ফিল্ডের মালিক ও গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পর আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত না দেয়ায় জিয়াউল হক তাহিরের বিরুদ্ধে বাহুবল মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মডেল ব্রিক ফিল্ডের সিংহভাগ শেয়ার মালিক মেহেরুন্নেছার স্বামী কবির হোসেন। এছাড়া শেয়ার মালিকের আরো ২৭ লাখ টাকা ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে।
সূত্র জানায়, ৬ বছর আগে বসিনা গ্রামের জিয়াউল হক তাহির, বি.বাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মীরতলা গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা ও স্থানীয় আরেকজন সহ তিন জন মিলে যৌথভাবে মডেল ব্রিক ফিল্ড চালু করেন। এর মাঝে মেহেরুন্নেছার নামেই রয়েছে ষোল আনার মাঝে দশ আনা, আর জিয়াউল হক তাহিরের ৪ আনা শেয়ার। এর মাঝে শরীক মেহেরুন্নেছার স্বামী কবির হোসেন বিদেশে চলে যান। প্রথমে ফিল্ড ভাল চললেও পরবর্তীতে মেহেরুন্নেছার স্বামী কবির হোসেন বিদেশে চলে যাওয়ায় মেহেরুন্নেছার অনুপস্থিতির সুযোগে জিয়াউল হক তাহির একাই ফিল্ড পরিচালনা করতে থাকেন। এ সুযোগে বছর দুয়েক থেকে ফিল্ডের লোকসান দেখিয়ে আসছেন মেহেরুন্নেছার কাছে। এরই মাঝে কবির হোসেন দেশে ফিরে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নিজের সিংহভাগ মালিকানা মডেল ব্রিক ফিল্ডের হিসাব নিকাশে ব্যাপক গড়মিল। গড়মিল রয়েছে প্রায় ৫ লাখ ১০ হাজার ১৪০টি ইটের যার বাজার মূল্য ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ওই ইটগুলো তিনি বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় পরিত্যক্ত বিটিএন ব্রিক ফিল্ড ও নিজের বাড়ির আশপাশ এলাকায় ও বাড়ির আঙ্গিনায় বিশালাকৃতির স্তুপ করে রাখেন, যা থানায় দাখিলকৃত অভিযোগে ওই ইটগুলো উদ্ধারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থার আবেদন জানানো হয়। কিন্তু অভিযোগটি থানায় এফআইআরভূক্ত করা হয়নি বলে জানান কবির আহমদ। এনিয়ে শেয়ার হোল্ডার মেহেরুন্নেছা স্থানীয় কোন কোন ফিল্ডের মালিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক ডাকেন। মডেল ব্রিক ফিল্ডেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর লামাতাসির ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু মুছার সভাপতিত্বে ওই সালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নদী ব্রিকের মালিক শাহীন চৌধুরী, সুজাত ব্রিকের মালিক সানু মিয়া, মিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়ার অলি মিয়া, মিরপুরের মাস্টার হাবিবুর রহমান, শায়েস্তাগঞ্জ নিজামপুর ইউপির চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন, লস্করপুরের হেলাল চিশতি, আব্দুল কাইয়ুম, বসিনার ফারুক মেম্বার, মতিউর রহমান সানু প্রমুখ। সিদ্ধান্তসমূহ রেজুলেশন আকারে লিপিবদ্ধ করা হয়। এদিকে মডেল ব্রিক ফিল্ডে অতীতে যুক্ত থাকা বছন মিয়া, রুনা আক্তার, রমিজ আলী প্রমুখও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে। অথচ বাহুবলের প্রতিটি ব্রিক ফিল্ডই আর্থিকভাবে লোকসান গুণেননি কেউ। জিয়াউল হক তাহিরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়ার পর জিয়াউল উল্টো কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান প্রতারণার শিকার মেহেরুন্নেছা। তিনি ওই মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন।