বিভিন্ন মহলের নেতৃবৃন্দের গভীর শোক
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ জেলা অ্যাডভোকেট সমিতির সদস্য, নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জের অধিবাসী বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এতিমখানা রোডে বসবাসকারী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম করোনা আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ পুত্রসহ অনেক আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে মেডিকেলের ছাত্র এবং ছোট ছেলে স্কুলে লেখাপড়া করছে।
মরহুমের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়- গত এক সপ্তাহ আগে অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরপর তাকে ঢাকার মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে তিনি মারা যান।
হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ জানান, মো. নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে রোববার কোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
মরহুমের জানাজার নামাজ গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় জজকোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল সকালে তার মৃত্যু সংবাদ জানার পর পরই তার সহকর্মীসহ শুভাকাক্সক্ষীরা ফেসবুকে সংবাদটি শেয়ার করেন। প্রত্যেকেই তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী তাঁর শোকবার্তায় বলেন- ‘একজন অসম্ভব ভালো মানুষের চির বিদায় মনকে ভারাক্রান্ত করে দিলো, আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন, আমিন’।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান বলেন- অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম একজন অমায়িক মানুষ ছিলেন। সুন্দর ব্যবহার হাসিখুশী থাকতেন সবসময়। দেখা হলেই বলতেন সৈয়দ সাব কেমন আছেন। চমৎকার একজন মানুষ ছিলেন। দোয়া করি আল্লাহ যেন জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন। আমিন’।
অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন মন্তব্য করেন- ‘অ্যাডভোকেট নজরুল তোমার চলে যাওয়া খুব কষ্টের। ভাবতেই পারছি না তুমি নাই। প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তোমাকে বেহেশত নসীব করেন’।
শিবলী খান নামে একজন ফেসবুকে লিখেন- ‘সিনিয়র অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। ছবির ভদ্রলোকের সাথে আমার সরাসরি কখনোই কোনো আলাপ পরিচয় ছিলো না। কিন্তু বিভিন্ন দোকানের কেনাকাটায়, কাঁচাবাজারে বা সবুজবাগের গ্লোব লাইব্রেরীতে যখন উনার সাথে সাক্ষাৎ হতো, আমি উনাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম। আহা মানুষ কত সহজ সরল ভালো মানুষ হতে পারে। সেদিন অ্যাডভোকেট জাকির ভাইয়ের পোস্ট থেকে জানতে পারলাম তিনি করোনা আক্রান্ত। শুনে খুব খারাপ লেগেছিলো। পৃথিবী একজন সাদামনের দিলখোলা নেক বান্দাকে হারালো। আল্লাহ উনাকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ স্থানে দাখিল করুন।
ডাঃ সৈয়দ এম আবরার জাবের ফেসবুকে লিখেন- ‘একজন ভালো মানুষ। আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন। আমিন’।
শাহ্ জাহাঙ্গীর আলম সুমন নামে একজন লিখেন- ‘নিঃসন্দেহে উনি একজন ভালো মনের মানুষ ছিলেন। সব সময় কোর্টে সবাইকে প্রাণবন্ত রাখতেন। আমাদেরকে কখনো কখনো পকেট থেকে আতর বের করে লাগিয়ে দিতেন। এখন তো আর উনি কোনদিন আমাদেরকে ভালোবেসে আতর লাগিয়ে দিবেন না। উনি আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে অনেক দূরে চলে গেছেন। যেখানে একদিন আমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে। যেখান থেকে আর কেউ ফিরে আসে না। আল্লাহপাক যেন উনার সমস্ত গোনাহ মাফ করে জান্নাত নসিব করেন, আমিন’।
জি কে গউছের শোক ঃ হবিগঞ্জ বারের সিনিয়র আইনজীবী মো. নজরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ। তিনি গতকাল রবিবার সংবাদপত্রে প্রেরিত এক শোক বার্তায় এই শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। শোক বার্তায় জি কে গউছ বলেন- অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছিলেন সদা হাস্যোজ্জল একজন সাদা মনের মানুষ। মহান আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতবাসী করেন। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।