ভাঙ্গা সড়কে যাতায়াতে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা সদরের সাথে চার ইউনিয়নবাসীর যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা মাধবপুর-ধর্মঘর সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে আদাঐর, বহরা, চৌমুহনী ও ধর্মঘর এই চার ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক লোক যাতায়াত করে। মাধবপুরের দক্ষিণ অঞ্চলের ৪ ইউনিয়নের জনগণের দুঃখ মাধবপুর-ধর্মঘর সড়ক। দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের দুঃখ কবে গুছবে তা কেউ জানে না। প্রায় এক যুগের ভাঙ্গা সড়ক মেরামতের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দরপত্র আহ্বান করলে এইচই-এমএইচ (জেভি) নামক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। মাধবপুর থেকে ধর্মঘর মোট ১৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে চৌমুহনী বাজার পর্যন্ত ১২ কি.মি সড়ক সংস্কার করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সাথে গত বছরের ৩ জুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুয়ায়ী ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর কাজটি সম্পূর্ণ শেষ করার কথা। গত ১ বছরেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই সড়কের ৩০ ভাগ কাজও শেষ করতে পারেনি। এই কাজটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৬৫ লাখ, ৯৫ হাজার ২০১ টাকা। কিন্তু ঠিকাদার কিছু কাজ করে ইতিমধ্যে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে বলে এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে। উপজেলার দক্ষিণাংশের ৪টি ইউনিয়নে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি মহাবিদ্যালয়সহ সর্বাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ওই অঞ্চলে উৎপাদিত নানা জাতের বিপুল পরিমাণ সবজি রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত বাণিজ্যিকসহ উপজেলা সদরের সাথে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক হওয়ায় এর গুরুত্ব অপরীসীম। দীর্ঘদিনের ভাঙ্গা পিচঢালা সড়কটি পরিণত হয়েছে মাটির রাস্তাতে। ভাঙ্গা সড়কে যাতায়াতে জনগণকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সড়ক ভাঙ্গা থাকার সুযোগে যানবাহনের চালকরা যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে আদায় করে নিচ্ছে দ্বিগুণ, তিনগুণ ভাড়া। পানির মধ্যে ঢালাই ও নি¤œমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে সড়কের কিছু জায়গা। এ নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই স্থানীয় জনগণসহ সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহন চালকদের।
এইচই-এম এইচ (জেভি) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী জুয়েল আহমেদ জানান, কাজটি অনেক আগেই শেষ করা যেত। কিন্তু করোনা ও বর্ষা সমস্যার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজটি শেষ করা যায়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মাধবপুর উপজেলার প্রকৌশলী মোঃ জুলফিকার হক চৌধুরী জানান, ধীরগতিতে কাজ পরিচালনাকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। চুক্তির সময়সীমার ভিতরে কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত নিয়ে সেই সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করা হবে। হবিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ বলেন এ রাস্তাটির জনগণের চলাচলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঠিকাদার করোনার অজুহাত দেখিয়ে রাস্তাটি সময়মত মেরামত করেননি। রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি মাস খানেকের মধ্যেই মান সম্পন্নভাবে কাজ সম্পন্ন হবে।