স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি পোষাতে বড় শিল্প ও সেবা খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই ঋণের মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ হবে তিন বছর, চলতি বছরের ৪ অগাস্ট থেকে ২০২৩ সালের ৩রা অগাস্ট পর্যন্ত এ প্যাকেজের মেয়াদ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে হবে এবং তা পরিশোধ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার অর্থ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিমালা শিথিল করেছে। মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় বড় শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কম সুদে ও সহজ শর্তে চলতি মূলধনের জোগান দিতে ১২ই এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।
এর আওতায় সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তাদের সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার কথা বলা হয়। এ ঋণের মোট সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। বাকি সাড়ে ৪ শতাংশ ভর্তুকি হিসাবে দেবে সরকার। প্যাকেজের আওতায় ঋণ দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তহবিল জোগান দিতে ২৩শে এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে।
এ তহবিল থেকে ওই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫০ শতাংশ অর্থের জোগান দেওয়া হবে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহককে ১০০ কোটি টাকা ঋণ দিলে এর মধ্যে ৫০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক জোগান দেবে এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা দেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদ নেবে ৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার চার মাস পার হয়ে গেলেও ঋণ অনুমোদন হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।
মহামারির প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে দ্রুত ঋণ বিতরণের তাগিদ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ঋণ বিতরণ বাড়ছে না। এ কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক একের পর এক শর্ত শিথিল করছে।
১২ই এপ্রিল জারি করা সার্কুলারে বলা হয়েছিল, প্যাকেজের মেয়াদ হবে তিন বছর। কিন্তু তা সুনির্দিষ্ট করা ছিল না। বৃহস্পতিবার সার্কুলারে এর মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে চলতি বছরের ৪ঠা আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ৩রা আগস্টের মধ্যেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা নিতে হবে এবং পরিশোধ করতে হবে।
একইসঙ্গে ওই সময়ের মধ্যেই সুদ ছাড় সুবিধা পাওয়া যাবে। ঋণের মেয়াদ এর বেশি হলে সুদ ছাড় পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব নীতিতে ঋণটি চলমান রাখতে পারবে।
সার্কুলারে বলা হয়, পুনঃঅর্থায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে মাসে আবেদন করা হবে তার আগের মাসের শেষ দিনে ঋণের স্থিতির বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন করা হবে। এছাড়া পুনঃঅর্থায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আবেদনের ক্ষেত্রে গ্রাহকের তথ্য-উপাত্ত জমা দেয়ার ক্ষেত্রেও ছাড় দেয়া হয়েছে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com