সাফল্য

মোঃ জহিরুল ইসলাম লিটন পাঠান

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া, ছাতিয়াইন ইউনিয়নে হলুদ চাষ করে সহস্রাধিক কৃষকের ভাগ্য বদল হয়েছে। এ বছর হলুদের ভাল ফলন ও চড়া দাম পাওয়ায় কৃষকরা সফলতার মুখ দেখছেন। আগে এসব এলাকার ভূমি পতিত পরে থাকত। এখন মসলা জাতীয় হলুদ চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার ছাতিয়াইন শাহজাহানপুর, জগদীশপুর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের রতনপুর উত্তর নোয়াপাড়া, সন্তোষপুর, ভবানীপুর, মির্জাপুর, বড়ধূলিয়া, গোয়াছনগর, সুরমা, বিশাল এলাকা জুড়ে হলুদের চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছর এসব এলাকায় সামান্য পরিসরে হলুদ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এ বছর কৃষকরা বেশি পরিমাণ জায়গায় হলুদ চাষ করেছেন।
স্থানীয় হলুদ চাষী ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত স্থানগুলো হলুদ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জমিগুলো অপেক্ষাকৃত উচুঁ ভূমিতে হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সাধারণত পানি জমে না। পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হলে হলুদ ক্ষেতের কোনো ক্ষতি হয় না। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দর্যোাগ না থাকায় হলুদের ফলন হয়েছে বেশ ভাল। কৃষকরা জানান, হলুদ ক্ষেতে সাধারণত কোনো পোকায় আক্রমণ করে না। হলুদ গাছের পাতা তেতো হওয়ায় হলুদ গাছে পোকা বসে না। এ কারণে হলুদে কোনো কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। রতনপুর গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়া জানান, এ এলাকায় তিনি সর্ব প্রথম হলুদের চাষ শুরু করেন। গত বছর তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করেছেন। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে হলুদের চাষ করে আসছেন। চলতি বছরেও তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। যে ফলন হয়েছে তাতে আড়াই লাখ টাকার বিক্রয় আসবে বলে জানান তিনি। ইটাখোলা গ্রামের সোহেল মিয়া জানান, মসলা চাষের জন্য সরকার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও এ এলাকার কৃষকরা এ জাতীয় কোনো ঋণ পায়নি। তিনি জানান, কৃষকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঋণ সুবিধা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে কৃষকরা ব্যাপক আকারে হলুদ চাষ করতে পারত।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর মাধবপুরে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জায়গায় হলুদ চাষ করা হয়েছে। এ ফসলের চাষাবাদ ব্যাপক আকারে করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।