স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা সমস্যায় জর্জরিত হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল। ফলে বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। জেলা সদরের একমাত্র সরকারি হাসপাতালের এ দুরবস্থায় হতাশা বিরাজ করছে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। চিকিৎসক ও জনবল সংকটের পাশাপাশি অভ্যন্তরিন নানা সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালের দুইটি লিফটের মধ্যে একমাস ধরে একটি বিকল হয়ে আছে। এসি ক্যাবিনগুলোতে নেই বিদ্যুৎ। এভাবেই জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা।
প্রতিদিন গ্রামগঞ্জ থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল আসে শত শত রোগী। অভিযোগ, হাসপাতালে এসে কাঙ্খিত সেবা মিলে না। রয়েছে ওষুধ সংকট।
জানা যায়, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ওষুধের তীব্র সংকট চলছে। সরকারিভাবে সরবরাহকৃত ওষুধগুলো হাসপাতালে না পেয়ে বাইর থেকে কিনে খেতে হচ্ছে রোগীদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, ওষুধ সংকট সহসাই কাটছে না। কারণ কেন্দ্রীয়ভাবে ওষুধের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রোগীদের পর্যাপ্ত ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ৫৭টি চিকিৎসক ও কর্মকর্তার পদ রয়েছে। বর্তমানে সেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৭ জন। কাগজে কলমে ২৭ জন হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও কম। এর মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক ছুটিতে রয়েছেন। হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি পদে ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট ইউরোলজি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট নেফ্রোলজি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট অর্থো সার্জারি ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু ১ জন, সিনিয়র কনসালটেন্ট চর্ম ও যৌন পদে ১ জনের পদ খালি রয়েছে।
এছাড়া কনসালটেন্ট চক্ষু, রেডিওলজিস্ট, অর্থো সার্জারি, শিশু, প্যাথলজি, মেডিসিন, গাইনি, কার্ডিওলজি, মানসিক, গ্যাস্ট্রোলজি পদে ১টি করে পদ খালি রয়েছে। অ্যানেসথেটিস্ট পদে ৪টির মধ্যে ১টি খালি রয়েছে। মেডিকেল অফিসার প্যাথলজিস্ট ২টি, রেজিস্ট্রার ১টি, মেডিকেল অফিসার রক্ত ১টি ও মেডিকেল অফিসার ১৪টি পদের মধ্যে খালি রয়েছে ৫টি পদ।
চিকিৎসক সংকটের কারণে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে হাসপাতালে আগত অনেক রোগী প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কথা হয় শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি নুছরাত আক্তার নামে এক অভিভাবকের সাথে। তিনি জানান, প্রতিদিন একবার একজন চিকিৎসক এসে তাঁর শিশুকে দেখে যান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চিকিৎসকের প্রয়োজন হলে আর দেখা মেলে না।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক সরকার বলেন, জেলা সদর হাসপাতাল হওয়ায় এখানে রোগীর চাপ অনেক বেশি। তবে তারা আন্তরিকভাবে যতটুকু সম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ওষুধ সংকটের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে হাসপাতালে ওষুধ না আসায় রোগীদের চাহিদা মতো ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না।