মসজিদের আসবাবপত্র ভাংচুর ও মাদ্রাসার ছাত্রদের তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুর পূর্ব ইটাখোলা গ্রামে মসজিদের ইমামকে জোরপূর্বক বিদায় করা, মাদ্রাসার ছাত্রদের তাড়িয়ে দেয়া এবং মসজিদের আসবাবপত্র ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ মসজিদের সামনে এসে মানববন্ধনে অংশ নেন এবং মসজিদের আসবাবপত্র ভাংচুরের মূল হোতা শাহ মোশারফ হোসেনের শাস্তিসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান। এসময় অনেককে ইমামের জন্য কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়।
জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার পূর্ব ইটাখোলা গ্রামের হযরত শাহজালাল (রঃ) হাফিজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ও হযরত শাহজালাল জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন একই গ্রামের শাহ মোঃ আব্দুর রহিম এর পুত্র শাহ মোশারফ হোসেন। বিগত ৮ বছর পূর্বে ক্যাশিয়ার থাকা অবস্থায় মসজিদ ও মাদ্রাসার ফান্ডের টাকার হিসাব কমিটিকে না বুঝিয়ে বিদেশ চলে যান তিনি। ২ বছর পর দেশে এসে আবারও এই দায়িত্ব পালন করলে তার হাতে ৮০ হাজার টাকা জমা হয়। ওই টাকা মসজিদ বা মাদ্রাসার কোন কাজে না লাগিয়ে পুনরায় তিনি বিদেশ চলে যান। পরবর্তীতে দেশে এসে আবারও মসজিদ ও মাদ্রাসার বিভিন্ন কর্মকান্ড একাই পরিচালনা করেন। ইমাম তার মনমতো না হলে তিনি জোরপূর্বকভাবে তাড়িয়ে দেন। ইতোপূর্বে ২ জন ইমামকে তিনি তাড়িয়ে দিয়েছেন। এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে মুখ খুলে কেউ কথা বলেনি। কেউ প্রতিবাদ করলে তিনি নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখান। সম্প্রতি তিনি বর্তমান ইমাম মাওলানা সোহেল আহমেদকে চাকুরি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও মানোন্নয়নে এবং মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ইমাম সোহেল আহমদের অগ্রণী ভূমিকা থাকায় তার প্রতি গ্রামবাসীর ভালবাসা বেড়ে যায়। ফলে ওই ইমামকে বহাল রাখতে কমিটির লোকজন ও গ্রামবাসী একমত হন। কিন্তু ক্যাশিয়ার মোশারফ হোসেন কোন অবস্থাতেই ওই ইমামকে রাখতে চান না। বরং তাকে বিদায় করতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে মাদ্রাসা ও মসজিদের আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। একই গ্রামের সুমন মিয়া এসবের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা ও তার খামারের গরু পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। ফলে কমিটির ও গ্রামের কোন লোক ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলেনি। কিছুদিনের মধ্যেই উক্ত মাদ্রাসার ৬ জন ছাত্র পাগড়ী নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়ায় ভয়ে ওই ৬ জনসহ মাদ্রাসার অধিকাংশ ছাত্র মাদ্রাসায় আসছে না। ফলে মাদ্রাসাটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ক্যাশিয়ারের এসব কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টায় এলাকার শত শত নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে হযরত শাহজালাল (রঃ) হাফিজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ও হযরত শাহজালাল জামে মসজিদের সামনে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানান। এসময় মসজিদের আসবাবপত্র ভাংচুর ও মাদ্রাসার ছাত্রদের তাড়িয়ে দেয়ায় মোশারফকে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com