চা বাগান ও বিভিন্ন ছড়ার ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে পাচার করা হচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার চা বাগান ও বিভিন্ন ছড়ার ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পাচার করছে একটি চক্র। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মহাসড়কের পাশে অবৈধ বালুর ডিপো তৈরি করে এসব বালু দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচার করে বালু মাফিয়া চক্রটি হয়ে উঠেছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। এতে করে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার অপরদিকে চা বাগানের পরিবেশ-প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বাহুবল উপজেলার হাফিজপুর, বশিনা ও ঢাকা-মৌলভীবাজার মহাসড়কের জয়পুর, নতুন বাজার এবং কামাইছড়া এলাকায় অন্তত ৬টি স্থানে স্তুপ করে রাখা হয়েছে বালু। কোন কোন স্থানে এক্সাভেটর দিয়ে বালু লোড করা হচ্ছে বড় ট্রাকে। মহাসড়কের পাশে এসব বালুর স্তুপের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব বালু বাহুবল উপজেলার রশিদপুর চা বাগানের কামাইছড়া ও দারাগাও চা বাগানের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে রাতের আধারে ট্রাক্টর যোগে এনে মহাসড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে রাতে ও দিনে বড় ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়। আর এসব বালু পাচার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাহুবল উপজেলার পূর্ব জয়পুর গ্রামের ওমর ফারুক আসাদ, চুনারুঘাট উপজেলার এলাকার কাউসার মিয়া, রমজান আলীসহ কয়েকজন।
কামাইছড়ার সুন্দ্রাটিকি এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনকারী রুমেন মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, তার উত্তোলন করা বালু অন্যত্র বিক্রি করতে দেন না ফারুক। তিনি ১৩শ টাকা করে প্রতি ট্রাক্টর কিনে নিয়ে উচ্চ মুল্যে বাহিরে বিক্রি করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ সময় তিনি বর্তমানে বালু উত্তোলন করছেন না বলেও দাবি করেন।
কামাইছড়া এলাকায় মহাসড়ক ঘেষা বালুর ডিপুর দায়িত্বে থাকা কাউসার মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা ডিপোর অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন। সেটি এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি যে জমি ব্যবহার করছেন সেটি সড়ক এবং চা বাগানের। বাগান কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই তারা ব্যবসা করছেন বলে জানান তিনি।
আরেক বালুর ডিপোর মালিক ওমর ফারুক আসাদ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান বলেন, কিছুদিন পূর্বে কামাইছড়াতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বালুর ডিপোর বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, শীঘ্রই প্রেরণ করা হবে। কেউ যদি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ব্যতীত বালুর ডিপো তৈরি করে ব্যবসা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।