হত্যা মামলার আসামী গৌরমনি সরকারকে কান ধরে উঠবস করিয়েছে ছাত্র-জনতা
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ (৫০) এবং আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকারকে (৫৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ছাত্রদল-যুবদল নেতাকর্মীরা। রবিবার দুপুরে ও সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে আওয়ামী লীগ দুই নেতাকে আটকের ঘটনা ঘটে।
আটককৃত শাহ রিজভী আহমেদ খালেদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুর্শি ইউনিয়নের কুর্শি গ্রামের শাহ মোছন আলীর ছেলে। এছাড়া খালেদ নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা মার্কেটের আয়শা ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী। অপর আটককৃত গৌরমনি সরকার পৌরসভার জয়নগর এলাকার ধরনি সরকারের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- রাজধানী ঢাকার নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচির ডাকে সারাদেশে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ডাক দিয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার মোড়ে রবিবার সকাল থেকে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কে পৃথকভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে নানা শ্লোগানে মিছিল ও শো-ডাউন দেয়া হয়।
রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা গৌরমনি সরকার নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় আসলে নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোশাহিদ আলম মুরাদ ও ছাত্রদল নেতা জাবেদ মিয়ার নেতৃত্বে যুবদল-ছাত্রদলের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী গৌরমনিকে আটক করে। এ সময় সম্মিলিত ছাত্র-জনতা তাকে কান ধরে উঠবস করায়। পরে গৌরমনি সরকারকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজা মার্কেটের আয়শা ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্তাধিকারী শাহ রিজভী আহমেদ খালেদকে আটক করা হয়। পরে খালেদকেও হেনস্তা করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। দুই নেতাকে আটকের পর হবিগঞ্জের রিপন শীল হত্যাকা-ের সঙ্গে খালেদ ও গৌরমনির সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবী করেন যুবদল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের দাবী- খালেদ নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেন প্লাজাস্থ আয়শা ভেরাইটিজ স্টোর নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয় এবং গৌরমনি নবীগঞ্জ বাজারে সবজি কিনতে আসলে তাকে আটক করা হয়। অপরদিকে যুবদল-ছাত্রদলের দাবী- বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিতে পলাতক শেখ হাসিনার নির্দেশে হামলার চেষ্টাকালে সাধারণ জনগণ ও ছাত্রজনতা আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এ ঘটনার পর নবীগঞ্জ বাজারের আওয়ামী লীগ পন্থি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ পন্থি কোন কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী রেখে পালিয়ে গিয়েছেন।
নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন- আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে বিএনপি-যুবদলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করে, আমরা প্রাথমিকভাবে তাদেরকে আটক করেছি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল হক খান জানান- নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাই তাদের আটক করা হয়েছে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com