চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের ষাড়েরকোণা পূর্বশত্রুতার জের ধরে একটি প্রভাবশালী মহল বসতবাড়িতে হামলা ও প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার গাছ কর্তন করে ক্ষতিসাধন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উক্ত ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় নারী মনোয়ারা বেগম হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে চুনারুঘাট থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করেন চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক আলাউল হোসেন। তিনি বলেন, গাছ কর্তনের আলামত পাওয়া গেছে। সঠিক সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ষাড়েরকোণা মৌজার জৈন উল্ল্যার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৯) ও তার মেয়ে মায়া বেগম খরিদ করা জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। উক্ত বসতবাড়ির পাশে আকাশী, বেলজিয়াম, ফলদ, বনজ, ঔষধীসহ নানা প্রজাতির গাছ রোপণ করেন। এমতাবস্থায় প্রতিপক্ষ একই এলাকার মৃত- আলাউদ্দিনের ছেলে বজলু মিয়া (৪৫), মোঃ স্বপন মিয়া (৪২), মোঃ কুতুব উদ্দিন (৩৭), মোঃ বাবুল মিয়া (৪৮), মোঃ শরীফ উদ্দিন আহমেদ (২৩), মোঃ শফিক মিয়া (৩৫), মোঃ আরজু মিয়া (৫০) মনোয়ারা বেগমের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদসহ নানাবিধ হুমকি দিতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০ অক্টোবর লাঠি, লোহার রড ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে মনোয়ারার বসতবাড়িতে বিভিন্ন প্রকারের ৫০/৬০ গাছ কেটে ফেলে ক্ষতি সাধন করেন। এতে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনোয়ারা বেগম জানান। এ বিষয়ে কথা হলে মনোয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন- আমি অসহায় মানুষ। আমার কিছুই নেই। আমার স্বামী সহজ সরল হওয়ায় এবং আমাদের পরিবারে আর কোনো পুরুষ লোক না থাকার সুযোগে আসামীগণ প্রায় সময়ই আমাদেরকে বিভিন্ন ওজুহাতে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। এমতাবস্থায় আর্থিক অনটনের কারণে আমার মেয়ে প্রবাসে যায়। এরপর থেকে আমার মেয়ে প্রবাসে থেকে পারিবারিক আর্থিক স্বচ্ছলতা পূরনের পাশাপাশি উল্লেখিত ভূমি খানা ক্রয় করে। আসামীগণ প্রভাবশালী হওয়ায় উক্ত জমিসহ আমাদের বাড়িঘর হতে আমাদেরকে জোরে বলে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এমনকি বিভিন্ন সময় আমাদের বাড়িতে এসে আমাদেরকে অন্যায়ভাবে মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তাছাড়া আসামীগণ জোরপূর্বক তপশীল বর্নিত ভূমির সংলগ্ন দক্ষিণ দিকে রাস্তা আমাদের ভূমির সাথে মিশিয়ে বেআইনিভাবে প্রশস্ত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা প্রাণ ভয়ে কোনো প্রতিবাদ না করায় আসামীগণ আরো উত্তেজিত হয়ে ঘটনার তারিখ ও সময়ে আমাদের অগোচরে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আমার মেয়ের নিজ দখলীয় ভূমিতে রোপনকৃত গাছ কেটে ধ্বংস করে। আমাদের চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার গাছ। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এর সুবিচার দাবি করেন।