প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে মাউশির নতুন নির্দেশনা
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন ও ভর্তি প্রক্রিয়া বহাল রেখে বেসরকারি স্কুল এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে সোমবার (২৮ অক্টোবর) এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের শূন্য আসনসহ অন্যান্য তথ্য আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বরের মধ্যে টেলিটকের লিংক gsa.teletalk.com.bd-এ প্রবেশ করে টেলিটকের দেওয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দিতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে এন্ট্রি শ্রেণিতে এবং আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে সাধারণভাবে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে, কাক্সিক্ষত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। যেমন: ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোনো শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি, ২০২০ পর্যন্ত। সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭ পর্যন্ত। পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা হবে ৫৫ জন।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নির্ধারণ করবে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান বিভিন্ন শ্রেণির শূন্য আসনের চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারণ করবেন। কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তি কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধান কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত সফটওয়্যারে তার প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিভিত্তিক শূন্য আসনের সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য আপলোড করবেন।
ঢাকা মহানগরীর ভর্তি কমিটি কেন্দ্রীয়ভাবে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটাল লটারির যাবতীয় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করবে। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তির আবেদন ও আবেদনের ফি গ্রহণ এবং ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের আগে অন্য একটি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সফটওয়্যারের যথার্থতা যাচাইকরণ নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি শূন্য আসনের সমান সংখ্যক অপেক্ষমান তালিকাও প্রস্তুত করতে হবে। ভর্তি কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ক্রমানুসারে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকাশিত ফলের তালিকার ক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। শিক্ষাবর্ষের কোনো সময়ে আসন শূন্য হলে প্রকাশিত অপেক্ষমান তালিকা থেকে ক্রমানুসারে ভর্তি করে আসন পূরণ করতে হবে। শিক্ষাবর্ষের কোনো সময়ই এন্ট্রি/প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না।
নীতিমালায় বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর ভর্তি কমিটি ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে। উক্ত তালিকা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কমিটি কাগজপত্র যাচাইপূর্বক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যৌক্তিক কারণে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হতে না পারলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি গ্রহণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। তবে, সেক্ষেত্রে লটারির দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটির প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্বাচিতদের তালিকা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং নির্বাচিতদের তালিকা নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেবে। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকার বাইরে কাউকে ভর্তি করা যাবে না।
আবেদন, ভর্তি ও অন্যান্য ফি : শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচিত হওয়ার কারণে ভর্তির অনলাইন আবেদন ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে গ্রহণ করতে হবে। দরিদ্র, মেধাবী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উল্লিখিত ফি মওকুফের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবিহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বেতন ও টিউশন ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ এর ৯ আগস্ট ৩৭.০০.০০০০.০৭২.৪৪,০৯০.১২(অংশ- ২).১৫৭ নং স্মারকে জারিকৃত পরিপত্র অনুসরণ করতে হবে।
সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫০০, পৌর উপজেলা এলাকায় ১ হাজার, পৌর জেলা সদর এলাকায় ২ হাজার, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি হবে না।
ভর্তি ফি বাবদ সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। তা করলে সরকার এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com