কামরুল হাসান ॥ স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা পৌরসভাগুলো নানা সংকটের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে আর্থিক সংকটই বড়। অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেই। উল্টো চালু আছে ঢালাও কর মওকুফের সংস্কৃতি। তবে এর ব্যতিক্রম শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা। শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় মাত্র ২০ দিনে ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৪ টাকা রাজস্বখাতে অর্জিত হয়েছে। যা এই পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরেও হয়নি।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালিন সরকার প্রতিষ্ঠার পর নির্বাচিত মেয়র অপসারণ হলে পর্যায়ক্রমে ২৫ সেপ্টেম্বর শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন অত্র উপজেলার নির্বাহি অফিসার ফারজানা আক্তার মিতা।
এদিকে, পৌরসভার কাছে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতা, বিদ্যুৎ বিল, জ্বালানি বিলসহ বিভিন্নখাতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
এছাড়া পৌর নাগরিকদের কাছে বিভিন্ন খাতে পৌরসভার বকেয়া পাওনা আছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ ২ হাজার ৯৫৫ টাকা। তন্মধ্যে বাজার ইজারার বকেয়া ২৫ লাখ ৯০ হাজার ১০০ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৬০ লাখ ১২ হাজার ৮৮৫ টাকা, পৌর হোল্ডিং কর ২ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, রাজস্বখাতের বকেয়া আদায়ের জন্য প্রশাসক নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে নোটিশ পাঠিয়েছেন এবং পৌরসভা থেকে বিভিন্ন টিম গঠন করে নোটিশগুলো পৌঁছানো হয়। পরবর্তীতে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর এই ২০ দিনে ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬৪ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। তন্মধ্যে ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ১০৮ টাকা আদায় হয় পৌরকর থেকে। এ খাতে বকেয়া ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার ৯০১ টাকা। ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায় হয় ২ লাখ ৬৮ হাজার ৫০ টাকা।
এছাড়াও বেতন ভাতা সহায়তা মঞ্জুরি, স্থাবর সম্পতি হস্তান্তর কর, টমটম পার্কিং ফি, বিভিন্ন প্রকার সনদ, ঠিকাদারী লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স, গবাদি পশু জবাই ফি থেকেও রাজস্বগুলো আদায় হয়েছে।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ মোস্তুফা কামাল জানান- পৌর নাগরিকের কাছে বকেয়া পাওনাগুলো আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকের মাধ্যমে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সময় শেষ হলে প্রশাসক সহায়তা কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত নিয়ে মোবাইল কোর্টসহ অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, পৌরসভার রাজস্বখাতে অনেক টাকা বকেয়া পড়ে আছে। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টার্গেট অনুযায়ী বকেয়াগুলো আদায় করছি এবং ধীরে ধীরে আশানুরূপ আদায় করতে সক্ষম হবো। আমরা পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। এজন্য পৌরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।