ডেস্ক রিপোর্ট ॥ সব সরকারি চাকরিজীবীকেই সম্পদের হিসাব দিতে হবে। দুর্নীতি কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিভাবে হিসাব দিতে হবে তা নির্ধারণে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা হিসাব দেবেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ফরমেট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর জানানো হবে হিসাব দাখিলের তারিখ। গতকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মোখলেস উর রহমান বলেন, সরকারের সব স্তরের কর্মচারিকে সম্পদের হিসাব দিতে হবে। যারা দিবেন না তাদের খবর আছে, সোজা কথা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, কিভাবে হিসাব দিতে হবে তা নির্ধারণে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সম্পদের হিসাব দিলে দুর্নীতি কমে আসবে। সম্পদের হিসাব বছরে একবার দিতে হবে।
মোখলেস উর রহমান বলেন, সম্পদের হিসাব জমা না দিলে কি হবে সেটা আমরা অবশ্যই বলে দেব- দ-টা কি হবে, তার বিরুদ্ধে কিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, সম্পদের হিসাব জমা না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিনিয়র সচিব বলেন, এতদিন তো অনেক কথা শুনেছেন-জিরো টলারেন্স, হাতি-ঘোড়া। এসব শুনে লাভ নেই, আমি বলতেও চাই না। যেখানে যেটা করার আমরা করতে পিছ পা হবো না। আমাদের কোনো পাওয়ার রিসার্চ করতে হবে না। বিধি মোতাবেক কাজ করব। সাহসের সঙ্গে কাজ করব। প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আগে আমরা মনে করতাম, শুধু কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে, যারা কর দেন। কিন্তু, দেখা গেছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, পিয়ন অথবা ড্রাইভার ৪০০ কোটি টাকার মালিক এ রকমও তো পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে পারে। সেজন্যই কাজটা শুরু করেছি।
‘কিন্তু প্রশ্ন হলো, কবে, কে, কোথায় কিভাবে এ হিসাব দেবেন? এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিবকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে এনবিআরের একজন প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, কম্পোটলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এই কমিটির সদস্য সচিব থাকবেন।
এই কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে একটি ফরমেট তৈরি করবে জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ফরমটি হবে বাংলায়। এটি এক পাতার মধ্যে থাকবে। স্থাবর সম্পত্তি, অস্থাবর সম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পত্তি-এভাবে ফরমে থাকবে। এরপর আমরা বলে দেবো সব মন্ত্রণালয় এবং বিভাগে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে সম্পদের হিসাব জমা দিবে। মূলত আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এটি ফাংশনাল হবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা ফরমগুলো অফিস অফিসে পৌঁছে দেবো। আমরা তখন বলে দেব, কোন তারিখের মধ্যে হিসাব দাখিল করতে হবে।