মুফতি আলমগীর হোসাইন সাইফী

প্রশ্নঃ কুরবানী কার উপর ওয়াজিব?
উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর নারী যে ১০ই জিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ই জিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
প্রশ্ন: কুরবানীর পশুর বয়স কত হতে হবে?
উত্তরঃ পশুভেদে বয়সের ভিন্নতা রয়েছে। যেমন উট ৫ বছর পূর্ণ হতে হবে; গরু, মহিষ ২ বছর পূর্ণ হতে হবে; ছাগল, ভেড়া দুম্বা ১ বছর পূর্ণ হতে হবে। তবে শুধুমাত্র ভেড়া ও দুম্বা ৬ বয়সের সুটামদেহী ১ বছরের মত মনে হলে তা দ্বারা জায়েজ হবে।
প্রশ্নঃ কুরবানী কয় ভাগে দেয়া যাবে?
উত্তরঃ উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাত ভাগে দেয়া যাবে। সাতের কম যেমন এক, দুই, তিন, ইত্যাদি ভাগেও দেয়া জায়েজ। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বায় সর্বোচ্চ ১ ভাগে দেয়া যাবে।
প্রশ্ন: কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ দেয়া যাবে?
উত্তরঃ শুধুমাত্র উট গরু ও মহিষে আকিকার অংশ দেয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলের বেলায় দুই অংশ ও মেয়ের বেলায় এক অংশ দিতে হবে।
প্রশ্নঃ কুরবানীর শরীকদারের কারো টাকা হারাম হলে হুকুম কি হবে?
উত্তরঃ এ ক্ষেত্রে শরীকদারের কোন একজনের টাকা হারাম বা নিয়তে ভেজাল থাকলে কারো কুরবানী আদায় হবে না।
প্রশ্ন: কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কাটা হলে কুরবানী আদায় হবে কি না?
উত্তরঃ কুরবানীর পশুর যদি লেজ, কান বা শিং অর্ধেক বা তার বেশী কাটা হয় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে না। তবে যদি জন্মগতভাবে লেজ বা কান ছোট হয় তা দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে।
প্রশ্নঃ মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া কুরবানীর পশুর গোস্তের হুকুম কি?
উপ্তরঃ স্বাভাবিকভাবে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী দিলে, কুরবানীদাতা নিজে গোস্ত খেতে পারবে এবং অন্যকেও বিলাতে পারবে। তবে মৃত ব্যক্তির ও নিয়ত বা মান্নতের কুরবানী হলে কুরবানী দাতা তার গোস্ত খেতে পারবে না বরং সম্পূর্ণ গোস্ত ফকির মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে।
প্রশ্নঃ- কুরবানীর পশুর গোস্ত, চর্বি বিক্রি করা যাবে কি?
উত্তরঃ কুরবানীর পশুর গোস্ত, চর্বি বিক্রি করা যাবে না। চামড়া ইচ্ছে করলে নিজে ব্যবহার করতে পারবে, আর বিক্রির টাকা মিসকিনদের দিয়ে দিতে হবে।
প্রশ্নঃ- কুরবানীর পশুর গোস্ত দিয়ে কোন পারিশ্রমিক দেয়া যাবে কি না?
উত্তরঃ কুরবানীর গোশত দিয়ে কোন প্রকার পারিশ্রমিক দেয়া জায়েজ নেই।
প্রশ্নঃ- মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া জায়েজ কি না
উত্তরঃ মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েজ।
প্রশ্নঃ শরীকে কুরবানীর গোশত অনুমান করে বণ্টন করা যাবে কি?
উত্তরঃ অনুমান করে বণ্টন করা জায়েজ নেই। পাল্লা দিয়ে সমানভাবে ভাগ করতে হবে, নতুবা কুরবানী শুদ্ধ হবে না।
প্রশ্নঃ পশু জবাইয়ের কতক্ষণ পর চামড়া খসাতে হবে?
উত্তরঃ- পশু নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া খসানো বা রগ কাটা মাকরুহ।
প্রশ্নঃ দুর্বল পশু দ্বারা কুরবানী জায়েজ কি না?
উত্তরঃ কুরবানীর পশু যদি এতটাই দুর্বল হয় যে, জবাইয়ের জায়গা পর্যন্ত হেটে যেতে অক্ষম তা দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে না। সর্বোপরি কুরবানী হবে একমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য, লোক দেখানো বা সামাজিকতা রক্ষার মনোভাব নিয়ে কুরবানী হলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।