স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের চতুর্থ ধাপে চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় আজ বুধবার ভোটগ্রহণ করা হবে। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফোর্স মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন ও নির্বাচনী অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার করতে মাঠে থাকবেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি, পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
চুনারুঘাট থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানান, চুনারুঘাটে এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা হলেন- চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের (আনারস), বিএনপির সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান (ঘোড়া), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুর রহমান চৌধুরী (কই), রায়হান আহমেদ (মোটরসাইকেল) ও হাবিবুর রহমান জুয়েল (কাপ পিরিচ)।
ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান মহালদার (চশমা), উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক আহবায়ক ও তাঁতী লীগ সভাপতি কবির মিয়া খন্দকার (টিউবওয়েল), আব্দুল কাইয়ুম (মাইক), শাহজাহান (তালা), এম মুখলিছ (টিয়াপাখি), আজিজুল রুমন (হেলিকপ্টার) ও উজ্জ্বল দাশ (বই)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হচ্ছেন- মহিলা আওয়ামী লীগ উপজেলা শাখার সভাপতি আবিদা খাতুন (ফুটবল), কাজী সাফিয়া (হাঁস), খাইরুন (কলস), পারুল (পদ্মফুল) ও মুক্তা (বৈদ্যুতিক পাখা)।
এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের এর সাথে বিএনপির সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান এর হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে বলে এলাকায় প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক সহ সর্ব মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে আজ ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচনের ফলাফলেই জানা যাবে কে হাসবেন শেষ হাসি।
আমাদের মাধবপুর প্রতিনিধি জানান, মাধবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আজ। এ জন্য নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। তবে এর মধ্যেও প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। ৯৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৮টি কেন্দ্র ঝুঁঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘিœত হয় এমন যে কোনো কাজ কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
এবারের নির্বাচনে মাধবপুরে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৩ হাজার ১১৯ জন। এখানে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১০ জন।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহ-সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান (ঘোড়া), হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম (আনারস) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ হাবিব উল্লাহ সূচন (শালিক পাখি)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মাধবপুর পৌর বিএনপির সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল আজিজ (চশমা), উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এরশাদ আলী (বই), জগদীশপুর জেসি স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য সৈয়দ সামসুল আরেফিন রাজীব (তালা), আসাদুজ্জামান গেন্দু (টিয়াপাখি), মুফতি সুলাইমান গাজী (টিউবওয়েল), চা শ্রমিক নেতা বাবু দিরা নায়েক ধীরু (মাইক)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহানারা বেগম শেলী (ফুটবল), মহিলা দলের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আক্তার (কলস), জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাতেমা তুজ জোহরা রিনা (পদ্মফুল), আসমা আক্তার চৌধুরী (সেলাই মেশিন)।
এদিকে দু’দিন ধরে হবিগঞ্জে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলে বৃষ্টি থামলে নতুন করে পোস্টার লাগানো শুরু হয়। আজও বৃষ্টি থাকলে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে বলে মনে করছেন প্রার্থীরা। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে মাটির রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। এসব রাস্তায় সাইকেল ছাড়া অন্য যান চলাচলের সুযোগ নেই। বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়ায় হেঁটে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া দুষ্কর হতে পারে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঝুঁঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের ওপর আলাদা নজরদারি থাকবে। কোনো গোষ্ঠী যাতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে না পরে, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, পৌরসভা ও প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
মাধবপুর থানার ওসি রকিবুল ইসলাম খান পিপিএম বলেন, কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
৩৮টি কেন্দ্র ঝুঁঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এ কে এম ফয়সাল বলেন, এ ব্যাপারে কড়া নজরদারি রাখা হবে যাতে ভোট গ্রহণে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে।