বিক্রিত ভূমি ফেরত পাওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ

এফ আর হারিছ, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মিরপুর পাবলিক লাইব্রেরীর বৈধ কমিটি থাকা সত্বেও কোটি টাকা মূল্যের ভূমি বিক্রি করে দিয়েছে ভূয়া কমিটি। পাবলিক লাইব্রেরীর মূল্যবান এ সম্পদ রক্ষায় ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। গত মঙ্গলবার বিকেলে মিরপুর ইউপি কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা লাইব্রেরীর সম্পদ পুনরুদ্ধারের দাবি জানান।
জানা যায়, ১৯৭৬ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও সচেতন ব্যক্তিবর্গের সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠিত হয় মিরপুর পাবলিক লাইব্রেরী। প্রাথমিক পর্যায়ে মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে পরিচালিত হয় পাবলিক লাইব্রেরীর কার্যক্রম। পরবর্তীতে সদস্যদের চাঁদায় ১৮ হাজার টাকায় ক্রয় করা হয় লাইব্রেরীর নামে ১৪ শতক ভূমি। পরে ওই ভূমিতে টিনশেড ভবনের উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই পকেট কমিটি গঠন করে প্রায় ৪৫ বছর ধরে সাধারণ সম্পাকের পদ আঁকড়ে রাখেন মাস্টার আব্দুল গনি। প্রায় এক দশক আগে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করার জন্য লাইব্রেরীর মালিকানাধীন কোটি টাকা মূল্যের ৫ শতক ভূমি মাত্র ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন মাস্টার আব্দুল গণি ও সদস্য মাওলানা মখলিছুর রহমান।
এ নিয়ে কমিটির মাঝে দেখা দেয় অন্তর্কলহ। এলাকাবাসীকে নিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ আন্দোলন। নাটকীয়ভাবে সভাপতি নিযুক্ত হন বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান। এরপর অবৈধভাবে ভূমি বিক্রির ব্যাপারে নেয়া হয়নি কার্যকর পদক্ষেপ। তবে এসব কারণে মাস্টার আব্দুল গণিকে সেক্রেটারির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেক্রেটারির দায়িত্ব দায়িত্ব দেয়া হয় মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমেদকে।
৫ বছর মেয়াদি এ কমিটির তিন বছরের মাথায় সম্প্রতি কমিটির সেক্রেটারির ভূয়া পদবি দেখিয়ে কোটি টাকা মূল্যের আরও ৩ শতক ১১ লিংক ভূমি বিক্রি করে দিয়েছেন সহ সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ রমিজ আলী।
দলিল রেজিষ্ট্রেশন করে নামজারীর প্রাক্কালে লাইব্রেরীর বর্তমান সেক্রেটারি মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমেদকে ১০ লাখ টাকা উৎকোচ দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সুবাদে বিষয়টি অবগত হয়ে তড়িৎ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করেন ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ।
এ প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিক নেতা আসকার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ, চারগ্রাম নেতা জিতু মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান, প্রভাষক আয়ূব আলী, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ফারুক, দিদার মিয়া মাস্টার, সাবেক ইউপি সদস্য কদর আলী, আব্দুল কদ্দুস মেম্বার, আব্দুল আহাদ কাজল, কাজী আলফু মিয়া, দুলাল মিয়া, জয়নাল আবেদীন, জাহির মিয়া প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং তারা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।