স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ফান্দ্রাইল গ্রামে মসজিদ নিয়ে চাঞ্চল্যকর আফজাল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামীও তাদের সহযোগীরা এবার ভাংচুর ও লুটপাট করেছে হাজী রইছ উদ্দিন জামে মসজিদ। শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের জহির মিয়ার নেতৃত্বে ২০/২৫ জন ব্যক্তি মসজিদে হামলা করে গেইট, গ্লাসের দরজা এবং মসজিদের টাইলস্ ভাংচুর করে। অভিযোগ- হামলাকারীরা মসজিদে লাগানোর জন্য সংরক্ষিত টাইলস্ ও টাকাসহ দানবাক্স নিয়ে যায়।
হাজী রইছ উদ্দিন জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজলিস মিয়া জানান, শুক্রবার সকালে তিনি কয়েকজন লোক নিয়ে জুম্মার নামাজের জন্য পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করতে গেলে জহির মিয়ার নেতৃত্বে ২০/২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মসজিদে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ভাংচুরের ঘটনায় মসজিদের প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। হামলাকারীরা টাকাসহ দানবাক্স এবং মসজিদে লাগানোর জন্য সংরক্ষিত লক্ষাধিক টাকার টাইলস্ লুটপাট করে নিয়ে যায়। গেইট ভাংচুর করার পাশাপাশি সাইনবোর্ডও ভেঙ্গে ফেলে তারা। তিনি আরও জানান, ঘটনাটি তিনি পুলিশকে অবহিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফান্দ্রাইল গ্রামে ৩৫ বছরের পুরনো একটি মসজিদ নিয়ে বিরোধের জের ধরে ৫ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে পাচপীরের মাজারে ওরস চলাকালে আফজাল চৌধুরী খুন হন। আহত হয় আরও ১০ জন। নিহত আফজাল চৌধুরী ওই গ্রামের জামাল উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র। তিনি ঢাকা বিআরটিএ অফিসের ড্রাইভার। হামলাকারীরা পরে আফজাল চৌধুরীর বাড়ীঘরেও হামলা করে। এ ব্যাপারে আফজাল চৌধুরীর ভাই লাউছ মিয়া ৭ জানুয়ারি রাতে হবিগঞ্জ সদর থানায় ২২ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার ১ নম্বর হুকুমদায়ী আসামী দারগা আলতাফ চৌধুরী ও প্রধান আসামী বিজয় চৌধুরীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে পূর্ব ফান্দ্রাইল গ্রামের রইছ উদ্দিন একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। সম্প্রতি লন্ডন প্রবাসী সাইফুল আহমেদ সেফুল মসজিদটির উন্নয়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করেন। গ্রামবাসী এই মসজিদের নামকরণ করেন হাজী রইছ উদ্দিন জামে মসজিদ। কিন্তু এই নামকরণ নিয়ে গ্রামে বিভক্তি সৃষ্টি করেন আলতাফ দারগা। পাশাপাশি মসজিদের উন্নয়ন কাজ ও নামকরণে বাধা দেন। শুধু তাই নয় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের উপর হামলার ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনায় সাধন মিয়া নামে একজন কারাভোগ করেন। বর্তমানে মামলা চলমান আছে। এরই ধারাবাহিকতায় হত্যা মামলার আসামীরা জামিনে এসে মসজিদে হামলা ও ভাংচুর করেছে।