স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনিয়মের অভিযোগ এনে বানিয়াচঙ্গের আড়িয়ামুগুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ২টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা বয়কট করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় আড়িয়ামুগুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারি প্রধান শিক্ষক, একজন কম্পিউটার অপারেটর, ১জন অফিস সহায়ক ও ১ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেই পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু সকাল ১১টা বাজার পরও যখন পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা না নেওয়ায় তাদের সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল হককে পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না এ ব্যাপারে জানতে চান। তিনি জানান, প্রশ্নপত্র তৈরী করতে সময় লাগবে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পরীক্ষার্থীদের হলরুমে ডেকে নেন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। পরীক্ষার্থীরা জানান, যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু না হওয়ায় তারা অংশ নেবেন না। এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নিয়োগ পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় পরীক্ষার হলরুমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এ খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমার দাস স্কুলে এসে পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ের ৪টি পদে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের আহ্বান জানালে সহকারি প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার অপারেটর পদের প্রার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে রাজি হন। অফিস সহায়ক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদের প্রার্থীরা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ওই ২টি পদে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান। পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডের প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল হক অফিস সহায়ক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। পরে সহকারি প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার অপারেটর পদে পরীক্ষা নেন।
অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী সৌরভ দাস, মিন্টু দাস, পংকজ দাস জানান, আমরা অফিস সহায়ক পদে ২৩ জন ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে ৮ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগেই আমরা জানতে পেরেছি, ৪টি পদে ৪/৫ লাখ করে টাকা নিয়ে প্রার্থীদের সিলেকশন করা হয়েছে। এর মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দের স্বজনরাও রয়েছেন। কেন্দ্রে আসার পর যখন দেখি যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না, তখন আমাদের আরো সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এ কারণে আমরা পরীক্ষা না দিয়ে কেন্দ্রস্থল ত্যাগ করে চলে যাই। সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে অংশ গ্রহনকারী একজন পরীক্ষার্থী জানান, আমরা শুধু নামমাত্র পরীক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছি। এ পদে আগেই প্রার্থী সিলেক্ট করে রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিকাশ দাস জানান, এলাকার একটি কুচক্রী মহলের উস্কানি পেয়ে অফিস সহায়ক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদের প্রার্থীরা যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেননি। তারা যে অভিযোগ করেছেন এর কোন ভিত্তি নেই। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল হক জানান, বিদ্যালয়টি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ার কারণে যেতে একটু সময় বেশি লাগে। এরপর প্রশ্ন তৈরী করায় পরীক্ষার নির্ধারিত সময় চলে যায়। কিন্তু আমরা পরীক্ষার্থীদের বলছি, পরীক্ষা শুরুর পর ওই সময় বাড়িয়ে দেবো। কিন্তু ২টি বিষয়ের পরীক্ষার্থীরা তাতে রাজি হননি। এ কারণে আমরা অফিস সহায়ক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছি। সহকারি প্রধান শিক্ষক, একজন কম্পিউটার অপারেটর পদের নিয়োগ পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তীতে স্থগিত হওয়া ২টি পদে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com