স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবৈধভাবে বিদ্যুত ব্যবহারের অভিযোগে অবশেষে ধরা পড়লেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সামছুল হক ও তার সহোদর। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যুত আদালতে মামলা করেছে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ১২ লাখ ১৪ হাজার টাকা আদায়ে বিবাদী করা হয়েছে তাঁর দুই ভাই মো. মোস্তফা কামাল ও মো. কুরবান আলী লিটনকে। সহকারী প্রকৌশলী সুমন কুমার প্রামাণিক জয় বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মিটার চেকিং, অবৈধ ও বকেয়া সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য শহরের মাছুলিয়া এলাকায় অভিযান চালায় হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। এসময় তারা ওই এলাকার মৃত হাজী আকবর আলীর ছেলে মো. সামছুল হকের বাড়িতে ব্যবহৃত প্রি-পেইড মিটারে ইনকামিং থেকে সরাসরি মিটার বাইপাস ও কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার করে ট্যারিফ বহির্ভূত মিটার দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অটো গ্যারেজের ৫টি ব্যাটারীচালিত রিক্সা চার্জ এবং গভীর নলকূপের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে দৈনিক প্রায় ৩ হাজার লিটার খাবার পানি উত্তোলন ও বোতলজাতকরণ কার্যক্রম দেখতে পান। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ওই প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পর থেকে অনুমোদিত লোড ১৫ কিলোওয়াট হিসেবে গত ২২ মাসে ১২ লাখ ৪০ হাজার ১২৪ টাকা বিদ্যুত ব্যবহার হওয়ার কথা থাকলেও রিচার্জ করা হয়েছে মাত্র ৯০ হাজার ৬৫০ টাকা! একই স্থাপনায় আরো একটি মিটারে বকেয়া রয়েছে ৩৫ হাজার ৬শ ২৬ টাকা। এছাড়া আরো একটি মিটারে ২৯ হাজার ৭শ ৭৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় সংযোগটি তাৎক্ষনিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করতে গেলে সামছুল হক ও তাঁর ভাইয়েরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সরকারী রাজস্ব আদায় কাজে বাধা প্রদান, অকথ্য ভাষায় গালাগালিসহ দেশীয় লাঠি সোঠা নিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মেরে ফেলার হুমকি ও ভয়তীতি প্রদর্শন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করেই তারা ফিরে আসেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিউবোর বিধি মোতাবেক সামছুল হক ও তাঁর ভাইদের কাছে ১২ লাখ ১৪ হাজার ৮৭৪ টাকা আদায়যোগ্য।
এদিকে, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যের এমন দুর্নীতির খবরে স্থানীয়রা হতবাক।
হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রশীদ জানান, অবৈধভাবে সে বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ তার কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পায় বিপিডিবি। তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে সরকারী কাজে বাঁধা প্রদান করে কর্মকর্তাদের হুমকি প্রদান করে। তার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।