স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে দিবসটি পালন উপলক্ষে জেলার সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ নিমতলায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।
সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ, পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি প্রথমে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন। এরপর জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া উল্লেখযোগ্য যেসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে সেগুলো হলো- সকাল সাড়ে ৯টায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন, সকাল ১০টায় শোক র‌্যালী ও মৌন মিছিল, সকাল ১১টায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল, দুপুর ১২টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার ও যুবঋণ বিতরণ, সকল মসজিদে বাদ যোহর ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত এবং সুবিধামত সময়ে সকল মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা, জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং অন্যান্য ভাষণ প্রচার, হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাদ্য পরিবেশন করা হয়।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনে নিজের জন্য কিছুই করেননি। মানুষের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে জীবনের ২৩টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। জাতির পিতার জন্মই হয়েছিল মানুষের উপকারের জন্য। দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে তার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকেই হত্যা করা নয়, তারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে হত্যা করতে চেয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন ও মানবতাবাদী নেতৃত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপসহীন ও মানবতাবাদী নেতৃত্ব এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের মনে স্বাধীনতার ঢেউ তুলেছিল। যার ফলশ্রুতিতে সর্বস্তরের জনতা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের জীবনবাজি রেখেছিল। বঙ্গবন্ধু আজও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মহান স্বপ্নদ্রষ্টা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে খ্যাত। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের মঞ্চে অন্যতম শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেই বিরল নেতা যিনি ধর্মমত নির্বিশেষে সব মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির কাছে অমর, অব্যয় ও চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। ১৫ আগস্ট শোকের দিনে শোককে শক্তিতে পরিণত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারী-পুরুষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।