যাতায়াতে ১০টি গ্রামের জনগণের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ
নুর উদ্দিন সুমন ॥ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক পাহাড়ি বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা। সুন্দরবনের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক এই বন প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর আয়তনের। এ বনভূমি বনবিভাগের কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য নিয়ে গঠিত। রয়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়-টিলা। এখানকার পাহাড়গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৭ মিটার, প্রতিদিন এই সড়কে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। পাহাড়ি বনাঞ্চলে যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা কালেঙ্গা সড়ক। পায়ে হেঁটে চলাচল সম্ভব নয়। যানবাহনে চলাচল করতে হয়। অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তার বেহাল দশা ঘটে। সড়কটিতে পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। জনদুর্ভোগ চরম আকার সধারণ করে। সড়কটি সংস্কারের দাবিতে বারবার দাবি জানালেও সংশ্লিষ্টদের তেমন কোন উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে কয়েকবার বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে এর কোন প্রতিকার বা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেউই। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন উপজেলার রানিগাঁও ইউনিয়নের কালেঙ্গা, লালকেয়ার, হরিণমারা, আবদুল্লাপুর, নারিন্দা ঠিলা, নতুন বাজার, চামলতলীসহ পুর্বাঞ্চলের প্রায় দশ গ্রামের মানুষ। এই সড়কের পাশে রয়েছে দুইটি কওমী মাদ্রাসা, কালেঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বেহাল অবস্থা এ সড়কের। ভাঙ্গা রাস্তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনও। কালেঙ্গা সড়কের কিছু জায়গা সলিং হলেও ধীরগতিতে কাজ করায় আজও সমাপ্ত হয়নি কাজ। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি পাকাকরণের দাবি করে এলেও বছরের পর বছর ধরে এ দাবি উপেক্ষিত।
কাদামাটি মাড়িয়ে শত শত পথচারীকে উপজেলা সদরে আসতে হচ্ছে। পুরো সড়কটির স্থানে স্থানে গর্ত আর কাদাজলে একাকার। গাড়ি তো দূরের কথা পায়ে হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে রাস্তাটি দিয়ে। এতে করে ময়লা আর কাদা পানি মাড়িয়ে চুনারুঘাট সদরে আসতে হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে। কয়কজন শিক্ষার্থী জানান, কালেঙ্গা সড়কে বড় বড় গর্ত ও বৃষ্টির পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। কাদা মাড়িয়ে আসতে গিয়ে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। অল্প বৃষ্টি ও বর্ষা মৌসুম এলেই এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা এ রকম দুর্ভোগের শিকার হন। এলাকার মানুষের হাট বাজার করা, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া– এমনকি অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতেও চুনারুঘাট উপজেলা সদরই তাদের একমাত্র ভরসা। তাই প্রতিদিনই এই সড়ক দিয়ে এলাকাবাসীকে চুনারুঘাট সদরে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর বলেন, এ সড়কটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সম্প্রতি এলজিইডিতে একটি প্রস্তাব প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি পাকাকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
চুনারুঘাট উপজেলা প্রকৌশলী মিশু কুমার দত্ত জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা পাকাকরণের জন্য একনেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখনও এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলেই টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে।