এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্রমিক সংকট কাটিয়ে হাওরাঞ্চলের নিচু ৯২ শতাংশ জমি ধান কাটা শেষ হয়েছে। আর উচু এলাকার ৫২ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকরা জমি থেকে আনা কাটা ধান শুকানো নিয়ে ব্যবস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা।
কৃষি বিভাগের সূত্রে জানায়, জেলার হাওর অঞ্চল বলে খ্যাত হবিগঞ্জ জেলায় এবার ১ লাখ ৩০ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। ধান কাটার শুরু দিকে করোনা ভাইরাসের কারণে কৃষকরা শ্রমিক সংকটের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিক এনে ধান কাটা শুরু করেন। ইতোমধ্যে জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও নবীগঞ্জ উপজেলার হাওর অঞ্চলের নিচু এলাকার ৯২ শতাংশ জমির ধান ও উচু এলাকার ৫২ শতাংশ জমি ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষক ও কৃষানী জমিতে থেকে খলার নিয়ে আসা ধানগুলো শুকানোর জন্য ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। তবে কৃষকরা জানিয়েছেন একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরী ৭শ টাকা দিতে হচ্ছে। কৃষকদের দৈনিক মজুরী দেয়াসহ ধান রোপন কাটাই সব মিলিয়ে প্রতি কের জমিতে ৭/৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আর প্রতি কের জমিতে গড়ে ১৫/১৮ মন ধান হচ্ছে। আর বর্তমান বাজারে কাচা ধানের মূল্য ৫শ টাকা এ হিসেবে কৃষকরা ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কৃষকরা জানিয়েছেন ধানের মূল্য বেশি হলে তারা লাভবান হতেন। এ জন্য ধান মূল্য বৃদ্ধি করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের কৃষক আলকাছ মিয়া জানান, তিনি এবার ৫০ কের জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। প্রতি করে জমিতে ধান রোপন, কাটা, মারাই করাসহ সব মিলিয়ে ৭/৮ হাজার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর জমিগুলোতে কোন জমিতে ১৫ মন আবার কোন জমিতে ২০ মন ধান ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি মন ধান কাচা ৫শ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। এ হিসেবে কৃষি জমি করে আমরা কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সরকার ধানের দাম আরো বাড়ালে কৃষকরা লাভবান হতো। তিনি বলেন-এছাড়া সরকার প্রতি বছর ধান সংগ্রহ করে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যাতের ধান সংগ্রহে দায়িত্ব দেয়া হয়, তারা প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান নেন না। ধান নেয়া হয়, কিছু নেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। কৃষকরা ধান দিতে গেলে নানা টান বাহনা করা হয়।
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ তমিজ উদ্দিন খান জানান, এবার জেলায় ৪ লাখ মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফসল উৎপাদন বেশি হয়েছে। তিনি বলেন-কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য নিধারণের জন্য সরকার কিছু দিন পরই ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করবে।