মোঃ আলাল মিয়া, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে সরকারী ত্রাণ বিতরনে অনিয়মের সংবাদ প্রচার করায় সন্ত্রাসী নিয়ে সাংবাদিক শাহ সুলতান আহমেদকে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন ও তার লোকজন। এসময় তাকে বাচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিক এম মুজিবুর রহমান ও বুলবুল আহমেদ। এ সময় আউশকান্দি বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিবাদী হয়ে উঠলে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল, নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এ এসপি পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। চেয়ারম্যান কর্তৃক এ রখম নেক্কার জনক ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
গতকাল বুধবার বিকেলে আউশকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনের নেতৃত্বে অস্ত্র-শস্ত্র সহকারে একদল সন্ত্রাসী দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি ও নবীগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি শাহ সুলতান আহমেদ উপর এ হামলা চালায়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনও ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এসময় তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সাংবাদিক মুজিবুর রহমান, সাংবাদিক বুলবুল আহমেদসহ আরো ৫ জন আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সরকারী ত্রাণ বিতরন করেন ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন। কিন্তু ১০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও তিনি দেন ৫ কেজি করে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আসুন অসহায় দিনমজুরদের মনের কথা শুনি’ শিরোনামে এক লাইভে সাধারণ মানুষের বক্তব্যসহ অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেন সাংবাদিক সুলতান। এরপর ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে অস্ত্র সহকারে আউশকান্দি বাজারে শাহ সুলতান আহমেদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনও ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন সুলতানকে। এ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করতে গেয়ে দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান, চ্যানলে এস এর প্রতনিধি বুলবুল আহমেদসহ অরো ৫ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় লোকজন শাহ সুলতানকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, সম্প্রতি আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দুস্থদের মধ্যে চাল বিতরন করা হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি লাইভ দেয়া হয়। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকের মধ্যে বিরুধের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিক মামলা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। চেয়ারম্যানের নিজের হাতে আইন নেয়া সঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেল এ এসপি পারভেজ আলম চৌধুরী জানান, বিষয়টি খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্থানীয় মুরব্বিয়ান বিষয়টি সমাধার ব্যাপারে বলছেন। যদি সামাজিক ভাবে সমাধা না হয় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।